পাল্টে গেছে নারায়ণগঞ্জের চিত্র, মহাসড়কে তীব্র যানজট  

ঈদকে সামনে রেখে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন শিথিল করায় নারায়ণগঞ্জের পরিস্থিতি একেবারেই পাল্টে গেছে। লকডাউন শিথিল করায় জেলার সড়কগুলো ফিরেছে পুরনো রূপে। গণপরিবহন ও মার্কেট চালু হওয়ায় সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট দেখা দিয়েছে। মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে বাস কাউন্টারগুলোতে পরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। মহাসড়ক দুটিতে থেমে থেমে চলছে গাড়ি। বিশেষ করে মহাসড়কের সাইনবোর্ড ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করায় ঢাকা থেকে আসতে এবং চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় যেতে, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা যেতে এবং ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জে প্রবেশ করতে সিগন্যালে পড়তে হচ্ছে। এতে করে সাইনবোর্ডে এলাকা পার হতে ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা। 

সাইনবোর্ড পার হয়ে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে কাঁচপুর সেতু পার হওয়া যাচ্ছে। তবে কাঁচপুর সেতু পার হয়েই আবার সিলেট মহাসড়কে যেতে সিনহা গার্মেন্টসের সামনে এবং বরাব, তরাবো বিশ্বরোড এলাকায় যানজটে পড়তে হচ্ছে। 

তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লাঙ্গলবন্দ সেতু এলাকায় কোনও যানজট নেই। ঢাকা থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ অংশে তেমন যানজট নেই। তবে প্রতিটি বাসস্ট্যান্ডেই ঘরমুখো মানুষের চাপ রয়েছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ওসি মনিরুজ্জামান জানান, ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড ফুটওভার ব্রিজের নির্মাণ কাজ চলার কারণে সিগন্যালে গাড়ি ছাড়তে দেরি হচ্ছে। ফলে সাইনবোর্ড এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া কাঁচপুর সেতুর পশ্চিম পাড় থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত যানজট নেই। তবে মহাসড়কে যানবাহনের ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে। 

তিনি বলেন, লকডাউন শিথিল করায় একসঙ্গে গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত যানবাহন চলার কারণে দুই মহাসড়কে চাপ বেড়েছে। তবে হাইওয়ে পুলিশ যানজট নিরসনে কাজ করছে বলে জানান তিনি। 

অন্যদিকে মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে শুরু হয়ে গেছে ঈদের কেনাকাটা। যে কারণে সকাল থেকেই ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্টগুলো তুলে দেওয়ায় শৃঙ্খলা মানছেন না কেউ। মাস্ক ছাড়াই মানুষ রাস্তায় অবাধে চলাচল করছেন। অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই করোনাভীতি দেখা যায়নি, যেন সবকিছু স্বাভাবিক। 



এদিকে জেলায় করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১৯০ জনের করোনায় শনাক্ত হয়েছে। নগরীর খানপুরে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ৮৭ জন রোগী ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে আইসিউতে চিকিৎসা নিচ্ছেন সাত জন। দেশে করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে লকডাউন শিথিল করায় সাধারণ মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তবে লকডাউনের পক্ষের মানুষের সংখ্যাই বেশি।