করোনায় বসে থাকেননি ডিগ্রি শিক্ষার্থী রাশেদ

মহামারিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ বহুদিন হলো। এ সময় বেকার হয়েছেন অনেকে, অনেকে বাধ্য হয়েছেন পেশা বদলাতে। তবে ধামরাইয়ের রাশেদুল দেখেছেন নতুন এক স্বপ্ন। অলস সময়ে বসে না থেকে বাবার সঙ্গে হাত মিলিয়ে শিখেছেন কৃষিকাজ। আগে যেখানে সবজি ক্ষেত থেকে মাসে ২০-২৫ হাজার টাকা আয় হতো, সেখানে এখন আসছে ৩০-৩৫ হাজার।

মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের ডিগ্রির শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম। ধামরাই উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের কাওয়াখোলা গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে তিনি।

রাশেদুল বললেন, ‘করোনার কারণে কলেজ বন্ধ হয়ে গেলো। কয়েকমাস অপেক্ষা করেছি। পরে বুঝতে পারি সহসা কলেজ খোলার সম্ভাবনা নেই। একটা কিছু তো করতে হবে। তখন বাবার কৃষিকাজে সহযোগিতা করতে শুরু করি। পরে নিজেও কয়েক ধরনের সবজি চাষ শুরু করি।’

বাবার সঙ্গে হাত মিলিয়ে শিখেছেন কৃষিকাজ শিখেছেন রাশেদুল

‘সবজির বাজার এখন তুলনামূলক ভালো। এ কারণে সাফল্য পেয়েছি। এখন আরও বড় পরিসরে চিন্তা করছি।’ জানালেন রাশেদুল।

প্রথমে বাবার সঙ্গে শুরু করলেও পরে নিজেই ৭০ শতাংশ জমিতে করলা, শসা, বেগুন, ধুন্দল চাষ শুরু করেন রাশেদুল। বিক্রি করছেন গ্রামেরই পাইকারি বাজারে। এখন পর্যন্ত বিক্রি করেছেন প্রায় তিন লাখ টাকার সবজি।

রাশেদুলের বাবা আব্দুল মালেক বলেন, ‘করোনাভাইরাসের জন্য ছেলের কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে আমার সঙ্গে সেও হাত লাগায়। এরপর দুজন মিলে দুই বিঘারও বেশি জমিতে করলা, বেগুন, মরিচ, শসাসহ অন্যান্য সবজি চাষ শুরু করি। এলাকার অন্য আরও অনেকের মতো বাইরে ঘোরাফেরা করে সময় নষ্ট করেনি সে।’

৭০ শতাংশ জমিতে চাষ করেছেন করলা, শসা, বেগুন ও ধুন্দল

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল হাসান বলেন, ‘করোনাকালে চমৎকার একটি উদ্যোগ নিয়েছে এ শিক্ষার্থী। একদিকে পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করেছে, অন্যদিকে স্বচ্ছলতাও এনেছে। ওই শিক্ষার্থীকে দেখে এলাকার অন্য বেকার তরুণ-তরুণীরাও আগ্রহী হবে।’

উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।