পদ্মা সেতুর পিলারে বারবার ধাক্কার বিষয়টি সাধারণ দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে গত কয়েক বছর ধরে ফেরি চলাচল করলেও ধাক্কা লাগার ঘটনা ঘটেনি। অথচ ২০ দিনের ব্যবধানে তিন বার রো রো ফেরি আঘাত করে পদ্মা সেতুর পিলারে। গত ২০ ও ২৩ জুলাই এবং ৯ আগস্ট যথাক্রমে পদ্মা সেতুর ১৬, ১৭ ও ১০ নম্বর পিলারে ফেরির ধাক্কা লাগে।
প্রতিটি ধাক্কার ঘটনায় ফেরি চালকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং শেষের দুটি ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) পর্যন্ত করা হয়েছে।
সাদা চোখে ধাক্কার বিষয়টিকে সাধারণ দুর্ঘটনা বলেই মনে হয়। আর এতে পদ্মা সেতুর পিলারেরও খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। তবে বারবার একই ঘটনা ঘটায় একে স্বাভাবিক বলে মানতে নারাজ সংশ্লিষ্ট কয়েকজন প্রকৌশলী।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে সব ধরনের জলযান চলাচল করতে পারবে। সেভাবেই সেতুর নকশা করা হয়েছে। কোনও সড়কে দুর্ঘটনা ঘটলে যেমন সে সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয় না, তেমনি দুর্ঘটনার কারণে পদ্মা সেতুর নিচ দিয়েও জলযান চলাচল বন্ধের সুপারিশ করা হবে না।
বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ এবং নৌপথে পরিবহন খরচ অনেক কম হয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন ইস্টার্ন রিফাইনারি ওয়েলের শত শত জাহাজ পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে আসা-যাওয়া করে। একটি ফেরির সর্বোচ্চ ওজন যেখানে মাত্র ৫০৮ টন, সেখানে তেলবাহী এসব জাহাজ তেলই পরিবহন করে ১২০০ টন। তবু কোনোদিন একটি ধাক্কাও লাগেনি। এই নদীপথে যেসব জলযান চলে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়টাও যদি পদ্মা সেতুকে ধাক্কা দেয় তাতেও সেতু টিকে থাকবে। তবু এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
এদিকে, পদ্মা সেতুর ১৭ নম্বর পিলারে আঘাত লাগার পর মাদারীপুরের শিবচর থানায় জিডি করে সেতু কর্তৃপক্ষ। শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন বলেন, জিডির বিষয়ে আমরা তদন্ত করেছি। ফেরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে, আমরা নাশকতার কোনও কিছু পাইনি। যদি পেতাম তাহলে অবশ্যই চালকের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতো।
অন্যদিকে, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানায় করা জিডির বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল কবীর জানান, জিডি নিয়ে তদন্ত করছি। তবে, এখনই কিছু বলা যাবে না।