যেখানে বদলে গেছে গৃহহীনদের জীবন

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নিয়ে অভিযোগ বিস্তর। তবে কিশোরগঞ্জের যশোদলে নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পটিকে বলা যায় এককথায় আদর্শ। সম্প্রতি প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ। সবুজে ভরে উঠেছে প্রকল্পটির ২২টি ঘরের আশপাশ। শুধু ঘর নয়, পাশের মাঠে খেলছে শিশুরা, কেউ দুলছে দোলনায়। আছে লেক, সুপেয় পানি ও বিদ্যুৎ। মসজিদে নামাজের জন্য পৃথক ব্যবস্থাও আছে। সবমিলিয়ে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার যাবতীয় আয়োজন আছে এখানে।

শারীরিক প্রতিবন্ধী আলী হায়দার এখানে একটি ঘর পেয়েছেন। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। তিনি বলেন, ‘ঘরের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। শিশুরা এভাবে বিনোদন পাবে, বিনাকষ্টে ধর্ম পালন করতে পারবো, এমনটা স্বপ্নেও ভাবিনি।’

ফাতেমা বেগম ও কমলা আক্তারও ঘরে উঠেছেন। সুন্দর পরিবেশ দেখে আবেগাপ্লুত তারাও।

এদের জীবনযাত্রাকে আরও সহজ করতে প্রতিটি পরিবারকে একটি করে চুলাসহ গ্যাস সিলিন্ডারও উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে উপজেলা প্রশাসন থেকে। যা আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনের সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি। তিনি বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পটি দেখে অভিভূত হয়েছি। আমার ধারণা এটি আদর্শ একটি গ্রাম হয়ে উঠবে।’

তার সঙ্গে ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদির, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাগুফতা হক, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সাত্তার, মাছুমা আক্তার, উপজেলা প্রকৌশলী মো. জুনায়েত আলম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ, যশোদল ইউপি চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ সুলতান রাজন প্রমুখ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাদির বলেন, ‘আমরা দায়সরা গোছের কোনও প্রকল্প করতে চাইনি। সুপরিকল্পিতভাবে এর নকশা করা হয়েছে। সৃজনশীলতা খাটানো হয়েছে। এখানে যারা থাকবে তারা যাতে একটি সুন্দর পরিবেশ পায়। বাজেটের দিকে আমরা তাকাইনি। উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকেও এখানে ব্যয় করা হয়েছে।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন বাকি রয়েছে এখানকার মানুষগুলোর জীবনমান উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের কাজ। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, ঋণসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধায় তাদের যুক্ত করার চেষ্টা চলছে।

জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, কিশোরগঞ্জে মোট ১২৪৭টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৯৭৮টির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।