ফেসবুকের অডিওতে আমার কণ্ঠ নকল করা হয়েছে: মেয়র জাহাঙ্গীর

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হওয়া একটি অডিওতে কিছু মন্তব্যসহ বক্তব্যটি ‘নিজের নয়’ বলে আবারও দাবি করেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি বলেছেন, ‘এটা আমার বিরুদ্ধে একটি ডিজিটাল ষড়যন্ত্র। প্রযুক্তিগত কৌশল খাটিয়ে সুপার এডিট করে আমার কণ্ঠ নকল করে এ অডিও করা হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হলেন আমার অস্তিত্ব। ছোটবেলা থেকেই জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করেই আমি ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ করছি। অথচ আমাকে ফাঁসাতে ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে ষড়যন্ত্রকারীরা এ কাজগুলো শুরু করেছে। মিথ্যা প্রচারণা দিয়ে তারা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। একটি স্বার্থান্বেষী মহল গাজীপুর সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন কাজকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এসব ষড়যন্ত্র করেছে। আমি কোনও ভুল করে থাকলে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন আমার অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক।’

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) গাজীপুর সিটি করপোরেশন কার্যালয়ের মিলনায়তনে মহানগর এলাকার পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে গাজীপুর মহানগরের ১৪৪টি পূজামণ্ডপের প্রতিটিতে ৩০ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ ও চেক সহায়তা প্রদান করেন। এ সময় গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রউফ নয়ন, অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন বাবুল, গাজীপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আলতাব হোসেন, পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অরুন সাহা ও সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ দাস, মানিক চন্দ্র দে-সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মেয়র জাহাঙ্গীর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং আমি যখন দেশের বাইরে ছিলাম, সেই সুযোগে ওই মহলটি এসব অপপ্রচার চালিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে রাস্তায় টায়ার পুড়িয়েছে। কোনও বিবেকবান মানুষ এটা করতে পারে না। আল্লাহ এর বিচার করবেন। অন্ধকার থেকে সত্য একদিন বেরিয়ে আসবেই।’

তিনি বলেন, ‘আমি দুর্নীতি করি না, দুর্নীতিকে প্রশ্রয়ও দেই না। এতে একটি মহল ক্ষুব্ধ হয়ে আমার বিরুদ্ধে আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারে নেমেছে। আমি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচিত হয়ে যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি তখন এ সিটি করপোরেশনের ২৪০ কোটি টাকা ঋণ ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তায় সে অবস্থা কাটিয়ে আমি গত দুই অর্থবছরে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করি। নগরীর মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে স্বাধীনভাবে তাদের চলাচলের সুবিধার জন্য গত তিন বছর দিনরাত পরিশ্রম করে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করেছি।’

মেয়র আরও বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন এ দেশে সব ধর্মের মানুষ পাশাপাশি থেকে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করছে। ধর্ম হচ্ছে নিজস্ব বিশ্বাস, নিজস্ব অস্তিত্ব। যার যার অবস্থান থেকে যতটা সম্ভব এটাকে সমুন্নত এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। স্বাধীন এই দেশে ধর্ম নিয়ে কেউ যাতে দাঙ্গা করতে না পারে, সব ধর্মের মানুষ যাতে নিজেদের জন্মভূমিতে স্বাধীন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস ও চলাফেরা করতে পারে সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। তাই শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে সহায়তা করার দায়িত্ব আমাদের সবার।’