ফরিদপুরে নির্বাচনি সহিংসতায় যুবক নিহত, ৫০ বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ

ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় দফার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মারিজ সিকদার (৩০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এতে উভয় প্রার্থীর অন্তত ২০ সমর্থক আহত হন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে অন্তত ৫০টি বসতঘর।

শনিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সালথা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম জানান, যদুনন্দী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে গত ১৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুর বর মোল্লা মনোনয়নপত্র জমা দেন। তার বিপরীতে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন আওয়ামী লীগ সমর্থক গ্রাম্য মাতবর মো. রফিক মোল্লা ও নুরুজ্জামান টুকু ঠাকুর। রফিক মোল্লা ও টুকু ঠাকুর খারদিয়া এলাকায় স্থানীয় পর্যায়ে একসঙ্গে নেতৃত্ব দেন কয়েক বছর। তাদের বাড়িও একই গ্রামে।

তবে গত এক মাস আগে নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে বিরোধের জেরে বিদ্রোহী প্রার্থী রফিক মোল্লার কাছ থেকে আলাদা হয়ে টুকু ঠাকুর নৌকার মনোনীত প্রার্থী বর মোল্লা ও তার সমর্থক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর মিয়ার দলে যোগ দেন।

ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ

এ নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রব মোল্লার সমর্থক আলমগীর মিয়া ও টুকু ঠাকুরের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী রফিক মোল্লার বিরোধ চলছিল। এরই জের ধরে শনিবার সকাল থেকে খারদিয়া এলাকায় উভয় প্রার্থীর হাজারও সমর্থক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায় দুপুর ২টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি বসতঘরে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।

এতে মারিজ সিকদার, নাসির মোল্লা, রহিম মণ্ডল, রশিদ শেখ, সাকির মোল্লা ও টেপু শেখসহ উভয় প্রার্থীর অন্তত ২০ আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকাল ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রফিক মোল্লার সমর্থক মারিজ সিকদার মারা যান। তিনি খারদিয়া গ্রামের সওরাফ সিকদারের ছেলে।

মারিজের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে নৌকার মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকরা অন্তত ৫০টি বসত বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের খবর পাওয়া গেছে।

জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সুমিনুর রহমান বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’