মেয়ে হত্যার অভিযোগে মা গ্রেফতার

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে মেয়েকে গলাটিপে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। উপজেলার দেহুন্দা ইউনিয়নের চরদেহুন্দা গ্রামে বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) ভোরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মাইশা আক্তার (১৬) স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় সপ্তম শ্রেণির  ছাত্রী ছিল। তার বাবার নাম মো. বাবুল মিয়া। এ ঘটনায় মাইশার মা স্বপ্না আক্তারকে (৪০) বেলা ১১টার দিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত স্বপ্না চরদেহুন্দা গ্রামের তাহের উদ্দিনের মেয়ে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, স্বপ্নার সঙ্গে তার খালাতো ভাই ফায়জুলের দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বিচার-সালিশও হয়। তারপরও ফায়জুলের যাতায়াত ছিল ওই বাড়িতে। এর প্রতিবাদ করায় তারা দুই জনে মিলে মাইশাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।

মাইশার নানি বেদেনা আক্তার (৬৫) জানান, তিনি তার নাতিকে ছোট থেকে লালন-পালন করেছেন। তার মা মেয়ের খোঁজখবর তেমন একটা রাখতো না। সকালে স্বপ্না জানায়, হঠাৎ স্ট্রোক করে তার মেয়ে মারা গেছে। কিন্তু লোকজন মাইশার গলা ও সারা শরীরে দাগ দেখে পুলিশে খবর দেয়।

বিপুল মিয়া নামের এক আত্মীয় জানান, স্বপ্না আক্তার পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী তাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। আর ভোরেই আরেক অভিযুক্ত ফায়জুল মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়।

জানা গেছে, স্বপ্ন আক্তারের সঙ্গে ২০-২৫ বছর আগে বিয়ে হয় রাজশাহীর বাবুল মিয়ার। বাবুল ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। মাঝেমাঝে বাড়িতে যেতেন।

বাবুল মিয়া জানান, ফায়জুলের সঙ্গে তার স্ত্রীর সম্পর্ক ছিল কি-না সেটি জানেন না তিনি। তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছোট ছেলে তার সঙ্গে ঢাকায় থাকে। আর মাইশা বাড়িতে মায়ের সঙ্গে থেকে পড়াশোনা করতো।

করিমগঞ্জ থানার ওসি মো. শামছুল আলম সিদ্দিকী জানান, মা স্বপ্না আক্তার নিজেই তার মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে পুলিশের কাছে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। তবে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, ফায়জুলের সঙ্গে তার মেয়ের সম্পর্ক ছিল। এ কারণেই মেয়েকে হত্যা করেছেন তিনি। তবে প্রকৃত ঘটনা কী, তা তদন্ত না করে বলা যাচ্ছে না। আর এ হত্যাকাণ্ডে ফায়জুলের ভূমিকা কী ছিল, সেটিও তদন্ত করা হচ্ছে। ফায়জুলকে ধরতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে। মাইশার বাবা বাবুল মিয়া বাদী হয়ে করিমগঞ্জ থানায় স্বপ্না ও ফায়জুলের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।