নৌকার মনোনয়ন চান স্বামী-স্ত্রী ও ভাই

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মহেড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে চান একই পরিবারের তিন জন। তারা হলেন ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া তার স্ত্রী ও ভাই। বিষয়টি এখন বেশ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। আবার অনেকে এমন কাণ্ডকে হাস্যকর হিসেবেও দেখছেন।

নৌকার মনোনয়ন পেতে আওয়ামী লীগের দলীয় ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন মহেড়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া, তার স্ত্রী রাজিয়া বেগম ও ছোট ভাই আওলাদ হোসেন। তারা ছাড়াও এই ইউনিয়নে নৌকার মনোনয়ন চান পাঁচবারের সাবেক চেয়ারম্যান বিভাষ সরকার নুপুর। তিনি গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েও বিদ্রোহী প্রার্থী বাদশা মিয়ার কাছে হেরে যান।

জানা গেছে, ইউনিয়নটির বর্তমান চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য। গত নির্বাচনে তিনি নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে তাকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। বাদশা মিয়ার স্ত্রী রাজিয়া বেগম ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা ও উপজেলা নারী জাগরণ সংস্থার সভাপতি। ছোট ভাই আওলাদ হোসেন উপজেলা যুবলীগের সদস্য।

একটি সূত্র জানায়, বর্তমান চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন। এ জন্য তিনি মনোনয়ন নাও পেতে পারেন। এ কারণে তার স্ত্রী ও ভাইকে দিয়ে মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন। তাদের পরিবারের কেউ মনোনয়ন না পেলেও বাদশা মিয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। ছোট ভাই আওলাদ হোসেন চাচ্ছেন, তিনিই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্বও চলছে।

বাদশা মিয়া বলেন, ‘আমি এলাকা গুছিয়ে রেখেছি। গত বছর আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলাম। দল আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। মন খারাপ করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েও নৌকার প্রার্থী বিভাষ সরকার নুপুরকে হারিয়ে জয়লাভ করি। এবার শুনছি, গতবারের বিদ্রোহী প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন দেবে না। এই খবর পেয়ে আমার ছোট ভাই আওলাদও মনোনয়নপত্র তুলেছে। নৌকাকে ধরে রাখতে আমার স্ত্রীর নামেও মনোনয়নপত্র তুলেছি। আমার স্ত্রীও আমার মতোই জনপ্রিয়। তাকে দল মনোনয়ন দিলেও সে জয়ী হবে।’

আওলাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা সাত ভাই। আমাদের পরিবারের সবাই আওয়ামী লীগ করেন। আমি মির্জাপুর কলেজ ছাত্রলীগ শাখার সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। বর্তমান উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। আমার পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা রয়েছে। বিদ্রোহীদের এবার দল মনোনয়ন দেবে না। এ জন্য আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছি। দল আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে আশাবাদী। তবে দল যাকেই মনোনয়ন দিক আমি তার হয়েই কাজ করবো।’

বিভাষ সরকার নুপুর বলেন, ‘ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বিদেশ, সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন বিদ্রোহী প্রার্থীর ছোট ভাই। কোনও বর্ধিত সভা না করেই আমাকে ৩ নম্বর মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে তালিকা জমা দিয়েছে। দলীয় নিয়ম অনুযায়ী বিদ্রোহীরা নৌকার মনোনয়ন পাবেন না। গতবার আমি নৌকা পেয়েছিলাম, এবারও নৌকার পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।’

প্রসঙ্গত, পঞ্চম ধাপে আগামী ৫ জানুয়ারি এ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।