ইউএনওর বদলে গার্ড অব অনার দিলেন সহকারী সমাজ সেবা কর্মকর্তা

বীর মুক্তিযোদ্ধার অন্তিম অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) গার্ড অব অনার দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় এক মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দিয়েছেন উপজেলা সহকারী সমাজ সেবা কর্মকর্তা। বৃহস্পতিবার এ ঘটনার পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা।

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা সদরের গোন্দারদিয়া মহল্লার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সোনাউল্লাহ শেখ (৭২) নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ওইদিন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মধুখালী ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে স্থানীয় বনমালিদিয়ায় শাহ হাবিব কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মৃত এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের জন্য ইউএনও কিংবা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উপস্থিত ছিলেন না। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের সময় সালাম জানান উপজেলা সহকারী সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. বাবুল আক্তার।

বাবুল আক্তার জানান, এর আগে তিনি কোনও বীর মুক্তিযোদ্ধার রাষ্ট্রীয় মর্যাদার অনুষ্ঠানে ছিলেন না। এটি তার কাজও নয়। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর শপথ পড়ানোর অনুষ্ঠান নিয়ে ইউএনও ব্যস্ত থাকায় উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তার সুপারিশে এবং ইউএনওর সম্মতিতে তিনি ওই গার্ড অব অনার অনুষ্ঠানে যান।

এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে মধুখালী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার খুরশিদ আলম বলেন, ‘এটি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি অপমানজনক ঘটনা। নিয়ম হচ্ছে, ইউএনও’কেই এ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। ইউএনও রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত থাকলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু সহকারী কমিশনার (ভূমি) থাকার পরেও তাকে না পাঠিয়ে সহকারী সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে দিয়ে এ কাজ করানোর এ ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি সুস্পষ্টভাবে একটি অন্যায় কাজ। কোনও নিয়মের মধ্যেই এ ঘটনা ফেলা যাবে না।  মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশাসন মূল্যায়ন করে না এটি তারই একটি উদাহরণ।’

জানতে চাইলে মধুখালীর ইউএনও আশিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যদের অনুরোধ করেছিলাম, প্রধানমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠান শেষ হলে জানাজা দিতে। ওই অনুষ্ঠানের পর আমি ফুল নিয়ে প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু পরে জানতে পারি, জানাজার পর দাফন করা হয়েছে ওই মুক্তিযোদ্ধাকে। এ জন্য আমার কিছুই করার ছিল না।’

‘আমি কর্তব্য কাজে অবহেলা করিনি’ দাবি করে ইউএনও বলেন, ‘সহকারী সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে বলা হয়েছিল।  রাষ্ট্রীয় গার্ড অফ অনারের সময় কীভাবে সহকারী সমাজ সেবা কর্মকর্তা সালাম জানিয়েছেন তা আমার জানা নেই।’