সাফারি পার্কে ১৩ প্রাণীর মৃত্যু, তদন্তে আরও ১০ দিন সময় চেয়েছে কমিটি

গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে প্রাণীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি আরও ১০ দিন সময় চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। বুধবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) বিকালে তদন্ত কমিটির প্রধান বন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বুধবার দিনব্যাপী তদন্ত কমিটির সব সদস্য পার্কে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এ সময় প্রাণী চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

সঞ্জয় কুমার ভৌমিক বলেন, এখনও তদন্ত চলমান। প্রাণী দেহের নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন সব ল্যাব থেকে পাওয়া যায়নি। তদন্তের ধার্যকৃত সময় এখনও অতিক্রম হয়নি। তারপরও তদন্তের স্বার্থে এবং প্রয়োজনে আরও ১০ কার্যদিবস বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আগেও পার্ক থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। বুধবারও পার্কের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্য যারা আগে পার্ক পরিদর্শন করেননি তারাও বুধবার পার্ক পরিদর্শন করেছেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তদন্ত কমিটি, প্রাণী বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য এবং পার্ক কর্মকর্তারা এদিন পার্কে একত্রে কথা বলেছেন।

সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক মোল্লা রেজাউল করিম বলেন, তদন্ত কমিটি ও প্রাণী চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা আজ বিভিন্ন স্পট ঘুরেছেন। তারা পার্ক থেকে নানা ধরনের নমুনাও সংগ্রহ করেছেন। বুধবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পার্কে তদন্তকাজে সময় কাটিয়েছেন তারা।

প্রাণী বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. রফিকুল আলম, গাজীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. উকিল উদ্দিন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি অনুষদের অধ্যাপক ডা. মো. আবু হাদী নূর আলী খান, ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. কাজী রফিকুল ইসলাম।

গত ২৬ জানুয়ারি পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিককে আহ্বায়ক এবং এবং পরিবেশ-২ শাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরীকে সদস্য সচিব করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল, বন ভবন, ঢাকার বন সংরক্ষক এবং কেন্দ্রীয় পশু হাসপাতালের সাবেক চিফ ভেটেরিনারি অফিসার ডা. এ বি এম শহীদুল্লাহ।  

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পার্কের ১১টি জেব্রা, একটি বাঘ ও একটি সিংহ মারা যায়। এ ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করতে তদন্ত কমিটি গঠন ও বন অধিদফতর পার্কের তিন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে বন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।