৩ ফেরিঘাট অচলে সারাবছর দুর্ভোগ

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়ায় নদী পারাপারে মোট সাতটি ফেরিঘাট রয়েছে। তার মধ্যে তিনটি ঘাট দীর্ঘদিন ধরে অকেজো। এগুলো প্রায় সময় ব্যবহার করা হয় না। এতে প্রতিনিয়ত নদী পারের অপেক্ষায় যানবাহনের সারি থাকে ঘাটপ্রান্তে। সারাবছর দুর্ভোগ পোহাতে হয় নদী পার হতে আসা যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের। 

জানা গেছে, দৌলতদিয়া পারে সাতটি ঘাটের মধ্যে ১, ২ ও ৬ নম্বর ফেরি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করা হয় না। বাকি ৩, ৪, ৫ ও ৭ নম্বর ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হয়। বর্তমানে এই নৌপথে ছোট-বড় মিলিয়ে ২০টি ফেরি চলাচল করছে। ফেরি কম ও তিনটি ঘাট বন্ধ থাকায় ঘাটে প্রতিনিয়ত যানবাহন পারাপারে জট দেখা দেয়।

বুধবার (৯ মার্চ) সকাল ১০টায় দেখা যায়, ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের ওয়াজেদ চৌধুরী টেকনিকাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার পণ্যবাহী ট্রাক পারের অপেক্ষায় রয়েছে।

প্রতিনিয়ত নদী পারের অপেক্ষায় যানবাহনের সারি থাকে ঘাটপ্রান্তে

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট অফিস সূত্রে জানা যায়, এই নৌপথে ১১টি রো রো, ইউটিলিটি ছয়টি, কেটাইপ একটি ও ডাম্পসহ মোট ২০টি ফেরি যানবাহন পারাপারে চলাচল করছে। চলাচলরত অধিকাংশ ফেরিগুলোর বয়স ৩০ বছরের বেশি। বেশিরভাগ সময় রো রো ফেরিগুলো বিকল হয়ে পড়ে থাকে। এতে এই নৌপথে প্রতিনিয়ত যানবাহনচালক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

আব্দুল খালেক নামে এক ট্রাকচালক বলেন, দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট সংশ্লিষ্টদের অব্যবস্থাপনার কারণে প্রতিনিয়ত চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। লোকসান গুনতে হয় সাধারণ ব্যবসায়ীদের। সারাবছর ৩-৪টি ঘাট অকেজো হয়ে পড়ে থাকে। রো রো (বড়) ফেরিগুলো বিকল হয়ে থাকে। যে কারণে সারাবছর দুর্ভোগ সঙ্গী করে আমাদের চলতে হয়।

দিগন্ত পরিবহনের বাসচালক বলেন, দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের দুর্ভোগ কৃত্রিম। সিন্ডিকেড করে যানবাহন নদী পারাপারের কারণে ঘাটের দুর্ভোগ সারাবছর। কখনও ফেরি সংকট, ঘাট সংকট, ঘন কুয়াশা ও প্রচন্ড স্রোত। দুর্ভোগের শেষ নেই যেন এই ঘাটে।

দৌলতদিয়া ঘাটপ্রান্তে যানবাহনচালক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, নদীতে পানি কমে যাওয়ায় ঘাটগুলো অনেক নিচু হয়ে গেছে। ফেরিতে উঠতে অনেক সময় ব্যয় হয়। যে কারণে তিনটি ফেরি ঘাট বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে বর্ষা মৌসুমে ঘাটগুলো চালু রাখা হয়।

বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) প্রফুল্ল চৌহান বলেন, রাতে পচনশীল কাঁচামালবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করতে হয়। এ কারণে অপচনশীল ট্রাকের সারি তৈরি হয়েছে। তবে বিকালের মধ্যে এ সারি থাকবে না। এছাড়া এই নৌপুথে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বর্তমানে মোট ২০টি ফেরি চলাচল করছে।