আবরার হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বাবার সংবাদ সম্মেলন

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েটে) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামি মেহেদী হাসান রাসেলকে নির্দোষ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার বাবা রুহুল আমিন। সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুরে ফরিদপুরের নগরকান্দা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন।

সেখানে লিখিত বক্তব্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এই আসামির বাবা দাবি করেন, ‘আমার ছেলে রাসেল সম্পূর্ণ নির্দোষ। আবরার হত্যার সঙ্গে সে বিন্দুমাত্র জড়িত নয়। আমার ছেলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করে, সে বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিল, এই কারণে তাকে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। আমার ছেলে ঘটনাস্থলে ছিল না।’

তিনি আরও দাবি করেন, ‘একজন পিতা হিসেবে আবরারের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তবে আবরার হত্যার সঙ্গে যারা প্রকৃতভাবে জড়িত তাদের শাস্তি চাই। আমার ছেলের মতো কোনও নিরপরাধ যেন এই মামলায় শাস্তি না পায়। আমি এই বিষয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করছি।’

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে আবরার ফাহাদকে তার কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। তাদের বিরুদ্ধে ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। পরে রাত ৩টার দিকে শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই বছরের ৭ অক্টোবর রাজধানীর চকবাজার থানায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ ২২ জনকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে আট জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এদের সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

গত বছরের ৮ ডিসেম্বর এই হত্যাকাণ্ডে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মুজাহিদুর রহমান, মনিরুজ্জামান মনির, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুল ইসলাম, শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম, মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, এস এম মাহমুদ সেতু, মোস্তবা রাফিদ ও মোর্শেদ অমত্য ইসলাম।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- মুহতাসিম ফুয়াদ, ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না, আকাশ হোসেন, অমিত সাহা ও মোয়াজ আবু হুরায়রা।

আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডে প্রধান আসামি করা হয়েছে মেহেদী হাসান রাসেলকে। তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের সালথা উপজেলার রাংগারদিয়া গ্রামে। তার বাবা রুহুল আমিন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক ওয়ারেন্ট অফিসার।