লাশ ফেরত চান সার্বিয়ায় মারা যাওয়া বাদলের স্ত্রী

‘৬০ হাজার টাকা বেতনে চাকরির আশায় সার্বিয়ায় যান বাদল। শাহিন নামের এক দালাল নুরজাহান রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে তাকে সার্বিয়ায় পাঠান। সেখানে গিয়ে ওই এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করেও কাজ পাচ্ছিলেন না বাদল। পরে শাহিনের কথামতো আরও সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করেন এবং হৃদরোগে আক্তান্ত হয়ে বাংলাদেশ সময় ৭ মার্চ রাতে পথেই মারা যান তিনি।’ কথাগুলো বলছিলেন বাদলের স্ত্রী শাহানাজ আক্তার সাথী। স্বামীর মৃত্যুর দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও লাশ ফেরত পাননি তিনি। এ বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা চান তিনি।

নিহত বাদলের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার জামির্তা ইউনিয়নের মধুরচর গ্রামে।

বাদলের স্ত্রী সাথী জানান, তার স্বামী এর আগে কুয়েত প্রবাসী ছিলেন। গত চার বছর আগে কুয়েত থেকে চলে আসেন। এরপর মানিকগঞ্জ এলাকার শাহিন নামে ওই দালালের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। প্রথমে জাপানে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাদলের কাছ থেকে এক লাখ টাকা নেন শাহিন। পরে জাপান পাঠাতে না পেরে সার্বিয়ায় কৃষিকাজে ভালো বেতনে চাকরির আশ্বাস দেন। প্রায় চার বছর ঘোরানোর পর সাড়ে ছয় লাখ টাকায় গত বছরের ১৭ নভেম্বর সার্বিয়ায় পাঠানো হয় বাদলকে। সেখানে গিয়ে কোনও কাজ না পেয়ে নুরজাহান রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। পরে শাহিনের প্রলোভনে আরও সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে সার্বিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করেন। চার বার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পঞ্চম বারের চেষ্টায় ইতালি যাওয়ার উদ্দেশে লরিতে উঠলে পথে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বাদল। সঙ্গে থাকা বাংলাদেশি কর্মীদের কাছ থেকে তার মৃত্যুর খবর জানতে পারেন পরিবারের সদস্যরা।

তিনি আরও জানান, তাদের দেড় বছরের এক মেয়ে ও ছয় বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে। গ্রামের বাড়ি সিংগাইরে তার শ্বশুর-শাশুড়ি না থাকায় সার্বিয়া যাওয়ার আগে বাদল তাকে সাভারের রাজফুলবাড়িয়ায় বাবার বাড়িতে রেখে যান। এরপর থেকে ছেলেমেয়েদের নিয়ে সেখানেই বসবাস করছেন তিনি। দুই সন্তান নিয়ে এখন কী করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিয়ে সার্বিয়ায় গিয়েছিলেন বাদল। এখন মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার মতো সামর্থ্যও নেই পরিবারের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে স্বামীর মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তিনি।

আরও খবর: সার্বিয়ার রাস্তায় প্রাণ গেলো বাংলাদেশি কর্মীর