মোটরসাইকেলে সন্ত্রাসী হামলা, ২ আরোহী নিহত

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের পোদ্দার বাজারে মোটরসাইকেলের তিন আরোহীর ওপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে প্রতিপক্ষ। হামলায় দুই আরোহী নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হামলার ইন্ধনদাতা হিসেবে রুহুল আমিন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) দিবাগত রাতে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন উপজেলার জান্দি গ্রামের সোলেমান শরীফ (৩৫)। ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নেওয়ার সময় কামরুল মাতবর (৩২) নামে আরেক ব্যক্তি মারা যান। আহত ব্যক্তি হলেন একই গ্রামের মমিন উদ্দিনের ছেলে আমিনুর (৪০)। আমিনুর ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।

এলাকাবাসী জানায়, জান্দি গ্রামে দুইটি আলাদা গ্রুপের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন রুহুল আমিনের ছেলে জামাল শেখ ও নিহত কামরুল মাতবর। এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরে এই দুই গ্রুপের মধ্যে প্রকাশ্যে উত্তেজনা চলছিল। গত বুধবার ইফতার অনুষ্ঠানে জামাল গ্রুপের কয়েকজন সমর্থক কামরুলের সঙ্গে যোগ দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হন জামাল। এরই জেরে তুজারপুর ইউনিয়নের পোদ্দার বাজারে বৃহস্পতিবার ইফতারের আগ মুহূর্তে শাহীন চৌধুরী ও শফিক খানের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। তারাবিহর নামাজের পর ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে জামাল ও তার লোকজন পোদ্দার বাজারের পাশে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করে। সে সময় আমিনুলের মোটরসাইকেলে আমিনুল, কামরুল ও সোলেমান বাড়ি ফিরছিলেন।

রাস্তায় ওত পেতে থাকা প্রতিপক্ষ জামালসহ তার গ্রুপের আনুমানিক ১০/১৫ জন মোটরসাইকেল আরোহী তিন জনের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করে পালিয়ে যায়। অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলে সোলেমান শরীফ নিহত হন। গুরুতর আহত কামরুলকে রাতেই স্থানীয়রা উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাতেই ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান কামরুল।

হত্যা সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী রাতের বেলায় জামাল মাতবরের বাড়ি ঘেরাও করে ভাঙচুর করে। এ সময় আশপাশের ৮-১০টি বাড়িতে ভাঙচুরসহ লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) ফাহিমা কাদের চৌধুরী বলেন, ‘ফরিদপুরের পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলেই রয়েছেন। ঘটনার পর থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ, ডিবি মোতায়েন করা হয়েছে।’

ভাঙ্গা থানার ওসি সেলিম রেজা জানান, এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ গ্রামের বিভিন্ন মোড়ে মোতায়েন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তদন্ত করে পরে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হামলার ইন্ধনদাতা হিসেবে রুহুল আমিন নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।