ক্রিকেটার রুবেলের মৃত্যুতে কিশোরগঞ্জে শোক

ক্যানসারে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মোশাররফ হোসেন রুবেলের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে কিশোরগঞ্জে। এই সাবেক স্পিনারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকেই তার গ্রামের বাড়ি বাজিতপুর ও কিশোরগঞ্জের ক্রীড়াঙ্গনসহ সর্বসাধারণের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের স্তব্ধতা। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রুবেলের মৃত্যুতে শোক ও সমবেদনা জানাচ্ছেন ভক্তরা।

তার বাড়ি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার বলিয়াদি ইউনিয়নের সাপলেঞ্জা গ্রামে। রুবেল জাতীয় দল ছাড়াও যুক্ত ছিলেন কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠনগুলোর সঙ্গে। খেলার মাধ্যমে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন জেলার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট লীগে। তিনি জেলার সূর্য সংঘ দলের মাধ্যমে প্রথম কিশোরগঞ্জ লীগে পা রাখেন। তারপর দীর্ঘদিন নিয়মিত খেলোয়াড় হিসেবে অজয় স্মৃতি সংসদ ক্লাবে খেলার মাধ্যমে দ্যুতি ছড়িয়েছেন জেলা ক্রিকেটে।

খেলার মাঠে রুবেলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল কিশোরগঞ্জের অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটারের। যাদের চোখে সেটি এখন শুধুই স্মৃতির পাতা। এমন মৃত্যুতে সে স্থানীয় খেলোয়াড়দের মন আজ শোকে ভারাক্রান্ত। খেলার মাঠের এমন সতীর্থকে হারিয়ে তাদের চোখও ছলছল করছে।

ঢাকার বিভিন্ন লীগ ও স্থানীয় পর্যায়ে রুবেলের কাছের একজন ছিলেন কিশোরগঞ্জ ক্রিকেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ক্রিকেটার বিশ্বজিৎ রায় সুমন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘রুবেল আমার খুব কাছের একজন প্রিয় মানুষ ছিলেন। ক্রিকেটাঙ্গনে তার শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। সে সবার সঙ্গে খুব সহজেই মিশে যেতে পারতেন। এত ভালোমানের একজন খেলোয়াড় হয়েও তার মাঝে কোনও অহংকার ছিল না। নিজে থেকেই অনুজদের পরামর্শ দিতেন, বোলিং শেখাতেন। আমরা তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।’

স্থানীয় ক্রিকেট কোচ ও সাবেক ক্রিকেটার মো. আশরাফ উদ্দিন স্বপন বলেন, ‘তিনি কিশোরগঞ্জের গর্ব। দেশ-বিদেশে তার বোলিং ঘূর্ণির জাদুতে আমাদের অনুপ্রেরণার সঙ্গী ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন কিশোরগঞ্জের মাটিতে বিভিন্ন সংগঠনের হয়েও খেলেছেন। রুবেলের প্রচুর শুভাকাঙ্ক্ষী ও ক্রিকেট ভক্ত রয়েছে এখানে। যারা ভবিষ্যতে তার মতো একজন প্রতিভাবান ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে।’

জেলার সাবেক ক্রিকেটার ও অজয় স্মৃতি সংসদের সাবেক অধিনায়ক এহতেশামুল হুদা মুনাব্বী বলেন, ‘রুবেল বরাবরই মিশুক প্রকৃতির একজন ক্রিকেটার ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন আমাদের ক্লাবে নিয়মিত খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন। খেলাকে তিনি ভীষণভাবে উপভোগ করতেন। যতক্ষণ খেলার মাঠে থাকতেন, দলের অন্যান্য খেলোয়াড়দের মাতিয়ে রাখতেন। আর সবাইকে ভালো খেলার অনুপ্রেরণা জোগাতেন। তার মৃত্যুর সংবাদটি জানার পর থেকেই খেলার মাঠের বিগত দিনের সব স্মৃতি চোখে ভেসে উঠছে। এমন মৃত্যু মেনে নিতেও খুব কষ্ট। আমরা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’

ঢাকা বিভাগীয় ক্রিকেট আম্পায়ার্স অ্যান্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম শামীম খান বলেন, ‘রুবেল কিশোরগঞ্জের কৃতি সন্তান। তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সেরা স্পিনার হিসেবে খেলেছেন। পাশাপাশি তিনি জেলার বিভিন্ন ক্রিকেট সংগঠনগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার এমন মৃত্যুতে আমরা তার পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করছি।’