‘৫ কিমি গাড়ির সারি, কখন ফেরির দেখা পাবো জানি না’

যশোরের বেনাপোল বন্দর থেকে বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় গাজীপুরের টঙ্গীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন লোহার পণ্যবোঝাই ট্রাকচালক আবু বক্কর। শুক্রবার (২২ এপ্রিল) ভোর ৫টায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে আটকা পড়েন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত তিনি সেখানেই দাঁড়িয়ে।

দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন মহাসড়কে সিরিয়ালে আটকা থাকা অবস্থায় কথা হয় তার সঙ্গে। আবু বক্কর বলেন, ‘গাড়িতে বসে থাকতে থাকতে হাত-পা ফুলে যাচ্ছে। প্রখর রোদে গরমে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে খুব কষ্ট হচ্ছে। ঠিকমতো খেতে-ঘুমাতেও পারছি না। কী আর করবো, এভাবেই কষ্ট সহ্য করে ঢাকার টঙ্গী গিয়ে মাল নামাতে হবে।’

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‌‘দিনের পর দিন এই নদী পার হতে যদি ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগে, তাহলে আমরা কীভাবে বেঁচে থাকবো? কয়েক দিন পর ঈদ। শুনলাম এবার ঈদের আগে ও পরে সাত দিন ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে। জানি না কখন ফেরির দেখা পাবো।’

দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে নিয়মিত ভোগান্তি পোহাতে হয় চালক-যাত্রীদের

সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে দেখা যায়, ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড় পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পণ্যবাহী ট্রাকের সারি সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে এক কিলোমিটার যাত্রীবাহী বাসের সারি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের সারি আরও বাড়ছে। প্রতি রাতেও এই যানজটের মাত্রা কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

ঢাকাগামী রয়েল পরিবহনের শাহ ফরিদ নামে এক যাত্রী বলেন, ‘ঢাকায় যাচ্ছি ব্যবসায়িক কাজে। দুই ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় বাস দাঁড়িয়ে আছে। কয়েক দিন পর ঈদ। এখনও সড়কে যে পরিমাণ যানজট দেখছি, তাতে ঈদে কীভাবে মানুষ বাড়ি যাবে, সেই চিন্তাই করছি। এখনই যদি কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে ঈদে ঘরেফেরা মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকবে না।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শিহাব উদ্দিন জানান, ঈদের আগে ও পরে সাত দিন অপনশীল ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকার খবরে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ট্রাকের চাপ একটু পড়েছে। এছাড়া আজ রাজধানী থেকে অনেক পরিবারই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। সেজন্য উভয় ঘাটেই একটু যানবাহনের সিরিয়াল তৈরি হচ্ছে।