ভুল চিকিৎসায় মা-নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ তদন্তে কমিটি 

নরসিংদীর মেরী স্টোপস ক্লিনিকে শুক্রবার রাতে (২৭ মে) ভুল চিকিৎসায় মা ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। সিভিল সার্জন ডা. মো. নুরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ নরসিংদী সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. অসীম কুমার সাহার নেতৃত্বে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।  তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

এদিকে তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. অসীম কুমার বলেন, সকালে দায়িত্ব পেয়ে মেরী স্টোপ ক্লিনিকের ডাক্তার হেলেনা হালিমসহ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। সোমবার (৩০ মে) নিহতের পরিবারের পরিবারের সদস্য ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিচার বিশ্লেষণ শেষে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়া হবে। 

এদিকে শনিবার (২৮ মে) মেরী স্টোপস ক্লিনিক থেকে আটক দুই জনকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান। তবে এখনও কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি বলে জানান তিনি। 

স্বজনরা অভিযোগ করেন, গত ২৭ মে শুক্রবার নিহত সালেহা বেগমকে আলটাসানোগ্রাম করার জন্য স্বজনরা মেরী স্টোপস ক্লিনিক নিয়ে যান। এ সময় চিকিৎসক হেলেনা হালিম অস্ত্রেপাচারের পরামর্শ দেন। তবে সালেহা রাজি না হলে, তাকে বাচ্চার অবস্থা ভালো না বলে ভয় দেখানো হয়। পরে তাকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থা খারাপ হলে রোগীকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকা  মেডিক্যালে পৌঁছালে মা ও নবজাতককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়।

অভিযুক্ত ডাক্তার হেলনা হালিম বাংলা ট্রিবিউনক বলেন, অস্ত্রোপচারের সময় কোনও রোগী মারা গেলে স্বজনরা একতরফাভাবে ডাক্তারদের দোষারোপ করেন। কিন্তু বাস্তব ঘটনা একেবারই ভিন্ন। 

তিনি দাবি করেন, অস্ত্রোপচারে কোনও ত্রুটি ছিল না। অস্ত্রোপচারে রোগী আগেও সন্তান জন্ম দিয়েছেন। শুক্রবারও পেটে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসলে পেটে আগের সেলাইয়ের যায়গা ছিঁড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। পরে তাকে দ্রুত আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে বলি। আল্ট্রাসনোগ্রামে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন বিবেচনায় জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচার করতে বলা হয়। তবে একেবারে শেষ পর্যায়ে অস্ত্রোপচার টেবিলে রোগী হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরে তাকে দ্রুত ঢাকা পাঠানা হয়। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।