ফল ঘোষণার পর কেন্দ্রে হামলা-ভাঙচুর, শিশুসহ গুলিবিদ্ধ ৩

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে একটি ভোট কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফল ঘোষণার পর হামলা চালানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। এতে শিশুসহ তিন জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। 

বুধবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রহিম উদ্দিন মালাই মৃধা কান্দি একতা যুবসংঘ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। বিজয়ী মেম্বার জাহাঙ্গীর আলম ও পরাজিত প্রার্থী মতিউর রহমান সিকদারের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের পর কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়।
 
অভিযোগ উঠেছে, পরাজিত প্রার্থী মতিউর রহমান সিকদারের সমর্থকরা বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা চালান।

গুলিবিদ্ধরা হলেন ইমরান হোসেন, রুবিনা আক্তার ও তার তিন বছরের কন্যা লামিছা। তারা ওই এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার জাজিরার ৬টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সবগুলো ইউপিতে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হয়। বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১০ চেয়ারম্যান প্রার্থী, সংরক্ষিত ১৩ ও ৪৭ সাধারণ প্রার্থী বিভিন্ন পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। 

বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রহিম উদ্দিন মালাই মৃধা কান্দি একতা যুবসংঘ ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শেখ দেলোয়ার হোসেন ফল ঘোষণা করেন। ফল ঘোষণার পর বিজয়ী মেম্বার জাহাঙ্গীর আলমের সমর্থকরা মিছিল করতে থাকেন। তখন পরাজিত প্রার্থী মতিউর রহমান সিকদারের সমর্থকরা তাদের ওপর হামলা করেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ লেগে যায়।

একপর্যায়ে হামলাকারীরা ভোট কেন্দ্রে ভাঙচুর চালিয়ে নির্বাচন পরিচালনার কাজে নিয়োজিতদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল ইসলাম সোহেল পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবি নিয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন। সেইসঙ্গে অবরুদ্ধ কর্মকর্তাদের উদ্ধার করেন।

প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শেখ দেলোয়ার হোসেন বলেন, নির্বাচনের ফল ঘোষণা করে প্রার্থীদের ফল সিট বুঝিয়ে দেওয়ার সময় পরাজিত প্রার্থী মতিউর রহমানের সমর্থকরা হামলা চালান। তাদের হামলায় নির্বাচনে নিয়োজিত কর্মকর্তারাও আহত হয়েছেন। আমাদের কিছু মালামাল হারিয়ে গেছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সহযোগিতায় আমরা অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পাই।

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ লেগেছিল। তাদের সংঘর্ষ থামাতে ও নির্বাচনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের নিরাপদ রাখতে ১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে পুলিশ। এতে কয়জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে তা আমার জানা নেই।