ময়নাতদন্তে জানা গেলো স্কুলেই শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা

টাঙ্গাইল শহরের সৃষ্টি স্কুলের আবাসিক ভবন থেকে শিহাব মিয়া (১১) নামে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। 
 
রবিবার (২৬ জুন) বিকালে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সিভিল সার্জন বলেন, ‘টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে শিশুটির ময়নাতদন্ত করা হয়। রবিবার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। প্রতিবেদনটি থানায় পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।’
 
এর আগে গত ২০ জুন শহরের বিশ্বাস বেতকা সুপারি বাগান এলাকায় সৃষ্টি স্কুলের আবাসিক ভবন থেকে শিহাবের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান শিক্ষকরা।
 
শিহাব মিয়া সখিপুর উপজেলার বেরবাড়ি গ্রামের প্রবাসী ইলিয়াস হোসেনের ছেলে। ওই দিন শিশুটিকে হত্যার অভিযোগ তুলেছিল পরিবার। পরে মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পারিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এ ঘটনায় প্রাথমিক পর্যায়ে ওই দিন টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়।
শিহাব মিয়া
 
এদিকে, শিহাবের মরদেহ উদ্ধারের শুরু থেকেই তার পরিবার হত্যার অভিযোগ তুলে আসছিলেন। শিহাবকে হত্যার অভিযোগ এনে টাঙ্গাইল শহরে একাধিক ও তার নিজ উপজেলা সখিপুরেও একাধিক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত টাঙ্গাইল জেলার সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে রাজু ভাস্কর্য এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ.এফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কেএম সাইফুল ইসলাম খান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আতাউল মাহমুদ প্রমুখ অংশ নেন।
 
টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এখনও আমার হাতে এসে পৌঁছায়নি। প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
 
শিহাবের ফুফাতো ভাই আল আমিন সিকদার বলেন, ‘ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এসেছে। প্রতিবেদনে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার বিষয়টি এসেছে। এখন আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা চাই, দ্রুত সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মূল অপরাধীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।’
 
অপরদিকে, স্কুলের আবাসিক ভবন থেকে শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থীর পরিবার। সচেতন মহলেও বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও সচেতন মহল ভুক্তভোগী পরিবারের পাশে থাকায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শিহাবের বাবা-মা।