আড়াই বছরের সন্তানকে হত্যা, আদালতে মায়ের দায় স্বীকার 

নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলায় আড়াই বছরের সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় মা শারমিন আক্তার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠান আদালত। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) বিকালে নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোনালিসার আদালতে এই জবানবন্দি রেকর্ড হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, নিজ মেয়েকে হত্যার ঘটনায় মা শারমিন আক্তার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠান। 

আড়াই বছরের সন্তানকে হত্যার অভিযোগে মা আটক

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘শারমিন প্রথম থেকেই হত্যার কথা স্বীকার করেছে। মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করে আজ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।’

এর আগে, গত ৪ জুলাই সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়নের ডিক্রিরচর এলাকায় ইটভাটায় নিজ মেয়ে জান্নাতুলকে (আড়াই বছর) শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে শারমিন আক্তার। এ ঘটনায় নিহত জান্নাতুলের নানা ও অভিযুক্ত শারমিনের বাবা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের কারেছেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পরে তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এরপর থেকে তার স্বামী শাকিল তাকে রেখে অন্যত্র চলে যায়। সে স্ত্রী-সন্তানের খোঁজ নিতো না। অভাব-অনটনের কারণে ৪ জুলাই শারমিন ডিক্রিরচর এলাকায় আল মদিনা ব্রিকস নামক ইটভাটার ছাপড়া ঘরে নিয়ে আড়াই বছরের মেয়ে জান্নাতুলকে গলাটিপে হত্যা করে। এরপর তার মেয়েকে অচেতন অবস্থায় আমাদের কাছে নিয়ে এসে বলে, তার মেয়ে পানিতে পড়ে গিয়েছিল। এ কথা শুনে স্থানীয়দের সহায়তায় জান্নাতুলকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

পরে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে শারমিন একেক সময় একেক তথ্য দেয়। এক পর্যায়ে সে নিজে তার মেয়েকে গলাটিপে হত্যার কথা স্বীকার করে।

এদিকে অভিযুক্ত শারমিনকে প্রথমে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ আটক করে। এ বিষয়ে ফতুল্লা থানার ওসি রিজাউল হক দিপু বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ঘটনাস্থল সদর থানার ভেতর পড়েছে। সেজন্য রাতেই মামলা সদর থানায় হস্তান্তর হয়েছে। 

সদর মডেল থানার ওসি আনিচুর রহমান মোল্লা বলেন, ওই নারী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।