বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ: মূল পরিকল্পনাকারী রতনের স্বীকারোক্তি

টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও সংঘবদ্ধভাবে নারী যাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার মূল পরিকল্পনাকারী মাহমুদুল হাসান মুন্না ওরফে রতন হোসেনসহ আরও দুই জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিকালে টাঙ্গাইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নওরিন করিমের আদালতে তারা জবানবন্দি দেয়। এর আগে মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) রতনসহ ছয় জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নেয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এরমধ্যে চার জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানভীর আহমেদ বলেন, ‘রিমান্ডে থাকা চার জনকে আদালতে তোলা হয়। এরমধ্যে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী মাহমুদুল হাসান মুন্না ওরফে রতন হোসেন ও আব্দুল মান্নান আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। তবে হাসমত আলী ওরফে দীপু ও জীবন প্রামাণিক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়নি। পরে চার জনকেই কারাগারে পাঠানো হয়।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এ মামলায় মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে ১১ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আসামিরা সবাই টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে রয়েছে।’

স্বীকারোক্তি দেওয়া আসামিরা হলো মাহমুদুল হাসান মুন্না ওরফে রতন হোসেন, রাজা মিয়া, আউয়াল, নুরনবী, আব্দুল মান্নান, সোহাগ মন্ডল, বাবু হোসেন জুলহাস, আসলাম তালুকদার ওরফে রায়হান, রাসেল তালুকদার, আলাউদ্দিন ও নাঈম সরকার। এছাড়াও জীবন প্রামাণিক ও হাসমত আলী ওরফে দীপু আদালতে স্বাকীরোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়নি।

প্রসঙ্গত, ঈগল এক্সপ্রেসের বাসটি গত মঙ্গলবার (২ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসে। গন্তব্য ছিল নারায়ণগঞ্জ। রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৌঁছে সিরাজগঞ্জের একটি হোটেলে। মহাসড়কের পাশের ওই হোটেলে যাত্রীরা খাওয়া-দাওয়া করেন। যাত্রাবিরতি শেষে রাত ১২টার দিকে গন্তব্যে রওনা দেয় বাসটি। এরপর সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্যে তিন ধাপে ১৩ জন বাসটিতে ওঠে। পরে বাসে শুরু হয় ১৩ ডাকাতের তাণ্ডব। প্রথমে ছুরি ঠেকিয়ে বেঁধে ফেলে চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারকে। এরপর যাত্রীদের বেঁধে বাসটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে লুট করে মালামাল। লুটপাট শেষে এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে তারা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ডাকাতি চালিয়ে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়ায় একটি বালুর স্তূপে বাসটি উল্টে গেলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মধুপুর থানায় ওই বাসের এক যাত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।