জামাইকে হত্যার দায়ে শ্বশুরের যাবজ্জীবন

কিশোরগঞ্জে জামাইকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে শ্বশুর মো. আবু বাক্কারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৭ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সায়েদুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে আসামির ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের তারাপাশা এলাকার বাসিন্দা। কিশোরগঞ্জ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট মো. আবু সাঈদ ইমাম  এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বাদী শারমিন আক্তারের বাবা মারা যাওয়ার পর আবু বাক্কারের সঙ্গে তার মায়ের বিয়ে হয়। বাড়ির পাশেই ভাড়া থাকতেন তার সৎ বাবা। এই অবস্থায় ২০১৪ সালে শহরের বত্রিশ এলাকার বাসিন্দা রূপক চন্দ্র বণিকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে রূপক তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তিনি তাকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে বলেন। শারমিনের কথায় তিনি নিজ ধর্মও পাল্টে নাম রাখেন ওমর ফারুক। বিয়ের পর থেকে তাদের সংসারে মাঝেমধ্যে ঝগড়া হতো। বিষয়টি শারমিন তার বাবাকে বলেছিলেন। এতেই তার মেয়ের স্বামীর ওপর ক্ষিপ্ত হন বাবা। ২০১৯ সালে ৩০ মে সকালে জামাই শ্বশুরের বাগবিতণ্ডা হয়। 

একপর্যায়ে ঘর থেকে দা এনে প্রকাশ্যে জামাইকে কুপিয়ে হত্যা করেন আবু বাক্কার। খবর পেয়ে শারমিন সেখানে গিয়ে তার স্বামীর রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় আবু বাক্কার তাকে বলেন, ‘নে তোর সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ সারাজীবনের জন্য শেষ করে দিলাম’। সে দিন রাতেই আবু বাক্কারকে একমাত্র আসামি করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন শারমিন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার এসআই অজিত কুমার সরকার ২০১৯ সালের ১২ জুন আদালতে মামলার চার্জশিট জমা দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন কিশোরগঞ্জ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট মো. আবু সাঈদ ইমাম। তিনি বলেন, ‘বাদীপক্ষ এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেয়েছে’।

আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান বাচ্চু।