জমি নিয়ে বিরোধ, মামলা করায় বাদীর ছেলেকে ‘কুপিয়ে হত্যা’

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মতিউর রহমান মুন্সি (৩০) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। 

বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের মৃধাকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে দুপুর ১টার দিকে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মতিউর মৃধাকান্দি গ্রামের মৃত আব্দুল করিম মুন্সির ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবেশী ইকবাল মৃধা, বাদল মৃধা ও বিল্লাল মৃধাদের সঙ্গে ১০ শতাংশ জমি নিয়ে মতিউরের পরিবারের বিরোধ চলছিল। গত ২৩ আগস্ট মৃধারা জমি দখল করে রাতের আঁধারে ঘর নির্মাণ করেন। এ ঘটনায় মতিউরের মা বানেজা বিবি মৃধা পরিবারের কয়েকজনের বিরুদ্ধে নড়িয়া থানায় মামলা করেন। এরপর তারা মতিউর ও তার মায়ের ওপর ক্ষুব্ধ হন। সম্প্রতি তারা আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে আসেন। তাদের ভয়ে মাকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন মতিউর। জরুরি প্রয়োজনে মঙ্গলবার রাতে তিনি বাড়িতে আসেন। আজ সকালে বসতঘরে ঢুকে মতিউরকে কুপিয়ে আহত করা হয়। খবর পেয়ে স্বজনরা উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১২টার দিকে তার মুত্যু হয়।

মতিউরের বোন বকুল আক্তার বলেন, ‌‘ইকবাল, বাদল ও বিল্লালসহ ১০-২২ জন আমার ভাইকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে। ওরা দীর্ঘদিন থেকে আমার ভাই ও মাকে হুমকি দিয়ে আসছিল। আমি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও পুলিশের কাছে ছুটে গিয়েছি, ধরনা দিয়েছি। কিন্তু কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি।’

মতিউরের ভাই রিপন মুন্সি বলেন, ‘ওরা আমাদের মারধর করে জমি দখল করে ঘর তুলেছে। এ কারণে আমার মা মামলা করেছিল। এতে আরও ক্ষুব্ধ হয় তারা। জামিনে বেরিয়ে আমার ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।’

সদর হাসপাতালের চিকিৎসক সুমন কুমার পোদ্দার জানান, হাসপাতালে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই মতিউরের মৃত্যু হয়। তার শরীরের একাধিক স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে চিহ্ন রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।

নড়িয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবির হোসেন জানান, ইকবাল, বাদল ও বিল্লালসহ কয়েকজনের সঙ্গে জমি নিয়ে মতিউর রহমানের বিরোধ ছিল। এর জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়ে বলে ধারণা করা হচ্ছে।হত্যাকাণ্ডের পর মৃধা বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। তবে অভিযুক্তরা পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।