ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজট, মানুষের ভোগান্তি

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিমানবন্দর থেকে টঙ্গী পর্যন্ত থেমে থেমে চলছে যানবাহন। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে যাত্রী, গাড়িচালক ও সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। 

শনিবার (১ অক্টোবর) রাতে ও রবিবার (২ অক্টোবর) বেলা ১১টা পর্যন্ত বৃষ্টি হওয়ায় সড়কের ছোটবড় গর্তে পানি জমে এ যানজট সৃষ্টি হয়। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ বলছে, সকাল থেকে যানজট থাকলে এখন আগের চেয়ে কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে যান চলাচল।

ট্রাফিক পুলিশ বলছে, বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বিআরটি (বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট) প্রকল্পের কাজ চলছে। কাজ করতে গিয়ে সড়কের বিভিন্ন অংশে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত ও খানাখন্দ। এর মধ্যে শনিবার রাতের বৃষ্টিতে সেসব গর্ত ও খানাখন্দে পানি জমেছে। এতে ঠিকমতো যানবাহন চলাচল করতে না পারায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন অংশে লেন সংকোচন হয়ে পড়ায় যান চলাচলে ধীরগতি তৈরি হচ্ছে।

রবিবার দুপুরে আবদুল্লাহপুর মোড়ে যানজট দেখা গেছে। আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া সড়ক ও টঙ্গী-ঘোড়াশাল সড়কেও একই সমস্যা দেখা দেয়।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলাচলকারী আলম এশিয়া পরিবহনের চালক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কবে এই সড়কের দুরবস্থা শেষ হবে তা কেউ জানে না। মাঝেমধ্যে ইচ্ছে হয় গাড়ি চালানো ছেড়ে দিই। কিন্তু সংসারের কথা চিন্তা করে দুর্ভোগ মেনেই এই সড়কে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। যাত্রী ও আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই।’

চেরাগআলী এলাকার বাসিন্দা ও একটি বেসরকারি ব্যাংকের সহকারী পাবলিক রিলেশন অফিসার খাদিজা আক্তার বলেন, ‘এখন সকাল ৮টা থেকে অফিস। যেখানে এক ঘণ্টায় অফিসে যাওয়া যায়, আজ আড়াই ঘণ্টা লেগেছে। সড়কের কাজ সময়মতো শেষ না হওয়ায় বৃষ্টিতে গর্তে পানি জমে যানবাহন চলাচলে ধীরগতি দেখা হয়। মাঝেমধ্যে গাড়ি বিকল হয়ে যায়। এজন্য সকাল থেকে যানজট। আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’

এদিকে, বিমানবন্দর এলাকায় সড়কের গর্তে গাড়ি আটকে ধীরগতিতে চলাচল করায় আবদুল্লাহপুর, টঙ্গী, স্টেশন রোড, মিলগেট ও চেরাগআলী কলেজগেট পর্যন্ত তীব্র আকার ধারণ করেছে যানজট। তবে বোর্ডবাজার থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত যান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে।

যাত্রীরা বলছেন, শনিবার রাতে বৃষ্টি হওয়ায় সড়কের গর্তে পানি জমেছে। সেইসঙ্গে বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় যানজট দীর্ঘ হয়েছে। এজন্য অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ যানজটে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এর মধ্যে স্টেশন রোড থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত কোনও যানবাহন চলাচল করছে না। হেঁটে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। টঙ্গীর মিলগেট থেকে গাজীপুরমুখী একলেনে ধীরগতিতে গাড়ি চলাচল করলেও অন্য লেন বন্ধ রয়েছে। সবমিলে সকাল থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত যানজট লেগেই আছে। 

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার আবু সায়েম নয়ন বলেন, ‘ট্রাফিক চেইন সিস্টেমে ঢাকামুখী সড়কে যানবাহনের ধীরগতি রয়েছে। এজন্য ঢাকামুখী লেনের যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। যানজট নিরসনে সকাল থেকে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ। এখন যান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক।’

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আলামগীর হোসেন বলেন, ‘চেরাগআলী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত বিকল্প লেন তৈরি করেনি বিআরটি। মূল সড়কের নিচ দিয়ে পুরো অংশে ঢালাই করেনি। বিআরটি প্রকল্পের কাজের কারণে সড়কের অনেক স্থানে গর্ত তৈরি হয়েছে। ওসব গর্তে চাকা পড়ে আরও বড় হয়েছে। পাশাপাশি সড়কের পাশের ড্রেনেজে ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় বৃষ্টির পানি নামতে না পারায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা যানজট নিরসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’