মিশ্র ফল চাষে সফল বালিয়াকান্দির জাকির

২০১৯ সালে নিজের কয়েক শতাংশ এবং অন্যের কাছ থেকে কিছু লিজ নিয়ে মোট পাঁচ বিঘা জমিতে মিশ্র ফলের বাগান শুরু করেন জাকির হোসেন। পরের বছর পেয়ারা ও বরই থেকে আয় হয় এক লাখ টাকা। প্রথমবার তেমন লাভ না হলেও পরের বছর তিনি ভালো লাভের মুখ দেখেন। এখন তার বাগানে ৬০০টি পেয়ারা গাছ, ৬০০টি মাল্টা গাছ ও কয়েকশ’ বরই গাছ, যা থেকে প্রতি বছর গড়ে আয় হচ্ছে প্রায় আট লাখ টাকা।

জাকির হোসেনের এই মিশ্র ফল বাগানটি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নে অবস্থিত। তিনি ওই ইউনিয়নের শেখ পড়া এলাকার মৃত সোনাউল্লাহর ছেলে।

সরেজমিন মিশ্র ফলের বাগানে দেখা যায়, বাগানের মধ্যে থোকায় থোকায় ধরে আছে অসংখ্য মাল্টা ও পেয়ারা। পোকামাকড়ের হাত থেকে পেয়ারা রক্ষার জন্য সাদা পলিথিন দিয়ে মোড়ানো রয়েছে। নিজেই বাগান পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন জাকির হোসেন। সঙ্গে রয়েছেন আরও কয়েকজন। 

জাকির হোসেন বলেন, ‘২০১৯ সাল থেকে আমি মিশ্র ফলের বাগান শুরু করি। পরের বছর থেকেই ফল আসতে শুরু করে। ফলনও অনেক ভালো হয়েছে। প্রতিটি গাছেই প্রচুর ফল ধরেছে। বর্তমানে বাগান থেকে বেশ ভালো আয় হচ্ছে। বছর গড়াচ্ছে আর আয় বাড়ছে। বাজারে মাল্টা, পেয়ারা ও বরইয়ের অনেক চাহিদা রয়েছে। আশা করছি আগামী বছর থেকে বাগান থেকে আরও বেশি আয় হবে।’

পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষার জন্য পলিথিন দিয়ে পেয়ারা মোড়ানো হচ্ছে

জাকির জানান, ২০২১ সালে সাড়ে তিন লাখ টাকার শুধু পেয়ারাই বিক্রি করেছেন। চলতি বছর এই বাগান থেকে পেয়ারা বিক্রি করেছেন প্রায় পাঁচ লাখ টাকার এবং মাল্টা বিক্রি করেছেন প্রায় তিন লাখ টাকার। সেই সঙ্গে প্রায় লক্ষাধিক টাকার বরই বিক্রি করেছেন। সবমিলিয়ে ২০২২ সালে প্রায় ৯ লাখ টাকার পেয়ারা, মাল্টা ও বরই বিক্রি করেছেন জাকির। প্রতি বছর মিশ্র ফলের বাগান থেকে তার আয় প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা। চলতি বছরে এই আয় আরও বেশি হবে।

তিনি বলেন, ‘যেভাবে সার ও কীটনাশকের দাম বাড়ছে, তাতে আমিসহ এলাকার অনেক কৃষকই শঙ্কিত। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে ফল বাগানের মালিক ও কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‌‘কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কাজই হচ্ছে কৃষি খাতকে সম্প্রসারণ করা। এক্ষেত্রে কোনও উদীয়মান কৃষকের সন্ধান পেলে আমরা কৃষি দফতর থেকে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবো। তারা যেকোনও পরার্মশ চাইলে সুপরামর্শ তেবো। মিশ্র ফলচাষি জাকির হোসেন খুব ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। এভাবে বেকার তরুণরাও ফল চাষ ও কৃষিতে এগিয়ে আসলে তারাও স্বাবলম্বী হতে পারবেন।’