মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে যুবকের মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা

টাঙ্গাইলের সখিপুরে প্রতীমাবংকী মাদকাসক্তি পরামর্শ ও চিকিৎসা কেন্দ্রে মিলন মিয়া (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (৯ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়। সোমবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মারা যাওয়া মিলন মিয়া ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আন্তাজ আলীর ছেলে। তার পরিবারের দাবি, নিরাময় কেন্দ্রে মিলনকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর নিরাময় কেন্দ্রের কর্মকর্তারা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত ৩০ জুলাই মাদকাসক্ত মিলন মিয়াকে সখিপুর প্রতীমাবংকী মাদকাসক্তি পরামর্শ ও চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে মিলনের শারীরিক অসুস্থতার খবর তার পরিবারকে দেওয়া হয়নি। হঠাৎ রবিবার রাত ১১টার দিকে মাদকাসক্তি পরামর্শ কেন্দ্র থেকে মিলনের মাকে ফোনে জানানো হয় ছেলে অসুস্থ, হাসপাতালে আছে। এরপর রাতেই তার মা হাসপাতালে গিয়ে মিলনকে মৃত দেখতে পান।

মিলনের মা কল্পনা বেগম বলেন, ‘মাসিক খরচ দিতে এলে মিলন আমাকে জানাতো তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। খাবারও ঠিকমতো দিতো না। এটা স্বাভাবিক মৃৃত্যু নয়, আমার ছেলেকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

মিলনের বাবা আন্তাজ আলী বলেন, ‘মিলনের কোনও অসুখ ছিল না। তাকে নিরাময় কেন্দ্রে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই। এ ব্যাপারে মামলা করবো।’  

সখিপুর প্রতীমাবংকী মাদকাসক্তি পরামর্শ ও চিকিৎসা কেন্দ্রের পরিচালক নূরুল ইসলাম খান লরেন্স বলেন, ‘শ্বাসকষ্টজনিত কারণে তাকে রবিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয়। এখানে তাকে নির্যাতন করা হয়নি।’

নিরাময় কেন্দ্রের লাইসেন্স এবং নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা হয়েছে। কোনও চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। অন্য চিকিৎসক এনে চিকিৎসা দেওয়া হয়।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রুহুল আমীন মুকুল বলেন, ‘ওই যুবককে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

ওসি রেজাউল করিম বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় তার পরিবার এখনও অভিযোগ দেয়নি।’