শত বছরের লক্ষ্মী প্রতিমার হাট

এবারও জমে উঠেছিল গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার শত বছরের লক্ষ্মী প্রতিমার হাট। লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে শত বছর ধরে লক্ষ্মী প্রতিমার এই হাট বসে।

জানা গেছে, প্রতি বছর দুর্গাপূজার বিজয় দশমীর পর থেকে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার কালিগঞ্জ, পীড়ারবাড়ী, কান্দি, ধারাবাসাইল, শুয়াগ্রাম, চৌধুরীরহাট, ঘাঘর, কলাবাড়ি, রামশীল, জহরেরকান্দি, ওয়াপদারহাট, নৈয়ারবাড়ি, রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, মনোহর মার্কেট, পশ্চিমপাড়, রাজাপুর, কুশলা, লাখিরপাড় ও হিরণে লক্ষ্মী প্রতিমার হাট বসে। গত শনিবার (৮ অক্টোবর) ভোর থেকে পূজা শুরু হয়ে রবিবার (৯ অক্টোবর) রাত পর্যন্ত চলে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের বাড়িতে মণ্ডপ তৈরি করে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। প্রতিটি মণ্ডপের জন্য একটি করে লক্ষ্মী প্রতিমা স্থাপন করা হয়। এই উপলক্ষে কোটালীপাড়ায় বসে লক্ষ্মী প্রতিমার হাট।

হাট ঘুরে দেখা যায়, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যে যার পছন্দ মতো লক্ষ্মী প্রতিমা কিনছেন। ছোট প্রতিমা বিক্রি হয় ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় এবং বড় প্রতিমা ২০০ থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হয়। যে যার সাধ্যমতো প্রতিমা কেনেন। পাশাপাশি এসব হাটে পূজার উপকরণ হিসেবে বিক্রি হয় নলডুগলি লতা, কলাগাছ, হলুদগাছ, পদ্ম ফুল ও শোলার মালা।

লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে শত বছর ধরে প্রতিমার হাট বসে

উপজেলার রাঢ়ীর বিল গ্রামের মৃৎশিল্পী অজিত পাল বলেন, ‘উপজেলার অন্তত ২০টি স্থানে শত বছর ধরে লক্ষ্মী প্রতিমার হাট বসে। আমাদের পূর্ব পুরুষেরা এসব হাটে প্রতিমা বিক্রি করেছেন। আমরাও প্রতিমা বিক্রি করি। এখানে প্রতিটি হাটে আমাদের এসব অঞ্চলের তৈরি প্রতিমাই বিক্রি হয়।’

উপজেলার গোপালপুর গ্রামের সমীর কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ঘরে ঘরে লক্ষ্মী দেবীর পূজা করি। লক্ষ্মী দেবী তুষ্ট হলে ধন, সম্পদ ও ফসলে ধরণী পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। সংসার থেকে অভাব-অনটন দূর হয়। পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে-শান্তিতে থাকতে পারি। তাই প্রতিমার হাটে প্রচুর প্রতিমা বিক্রি হয়। আমরা বংশপরম্পরা এসব হাট থেকেই প্রতিমা কিনে আসছি।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, ‘কোটালীপাড়ার ঘরে ঘরে লক্ষ্মীপূজার উৎসব হয়। এই পূজাকে কেন্দ্র করে পাঁচ দিন আগে থেকে প্রায় ২০ স্থানে প্রতিমার হাট বসেছিল। শত বছর ধরে এসব হাটে প্রতিমা কেনাবেচা হয়ে আসছে।’

উৎসবমুখর পরিবেশে হাটগুলো থেকে ক্রেতা-বিক্রেতারা প্রতিমা কেনাকাটা করেন। হাটগুলো আরও শত শত বছর টিকে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।