ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক

বনানী থেকে ৫ ঘণ্টায় মাওনা

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) ভোর ৫টায় গাজীপুরের মাওনা যেতে বাসা থেকে বের হন পোশাক কারখানার কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির। বনানী থেকে মাওনা পৌঁছাতে তার সময় লাগে পাঁচ ঘণ্টা। পরে মাওনা পৌঁছে দীর্ঘসময় আটকে থাকতে হয় সড়কে। এক পর্যায়ে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছান তিনি।  সড়কে যানবাহনের বাড়তি চাপ এবং টঙ্গী এলাকায় সড়কের খানাখন্দের কারণে গত চার দিন ধরেই এ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।    

এদিকে বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষদিনে যানজটের ভোগান্তি আরও বেড়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে তিনগুণ বেশি সময় লাগছে সড়ক অতিক্রম করতে। মহাসড়কের টঙ্গী-গাজীপুর অংশে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। 

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দু’দিনের বর্ষণে সড়কের টঙ্গী-গাজীপুর অংশের খানাখন্দগুলোতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এ অবস্থায় দুর্ঘটনা এড়াতে চার লেনের সড়কের দুই লেনে যানবাহন চলাচল করছে। এতে যানজটে বেড়েছে যাত্রী দুর্ভোগ। বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত সড়কের খানাখন্দ শুষ্ক মৌসুমেও ধুলোবালিতে একাকার থাকে। এসব কারণে মহাসড়কের ওই অংশটিতে যাত্রী দুর্ভোগ নিয়মে পরিণত হয়েছে।

যানজটে আটকে থেকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা হন যাত্রীরাযাত্রী ও পরিবহন চালকদের ভাষ্যমতে, ভারী যান চলাচল করায় বিআরটি কর্তৃপক্ষ খানাখন্দ মেরামতে ইট-সুড়কি ব্যবহার করেছে। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হচ্ছে না। সামান্য বৃষ্টিতে খানাখন্দগুলো গর্তে রূপ নিয়েছে। স্টেশনরোড থেকে গাজীপুরের বড় বাড়ি পর্যন্ত  সড়কের দু’পাশেই ছয় কিলোমিটার এলাকায় যানজট তৈরি হচ্ছে।

গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান উদ্দিন বলেন, আমাদের পরিবহনগুলো দৈনিক ঢাকায় ছয়বার যাতায়াত করতো, আর যানজটের কারণে এখন এক বা দুইবার যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে মালিক, শ্রমিকদের আয়-উপার্জন কমে গেছে। তারা খুব কষ্টের মধ্যে দিন পার করছে। গাজীপুরের যানজট দিনদিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের টঙ্গী অঞ্চলের ট্রাফিকের পরিদর্শক শাহাদাত হোসেন বলেন, সকাল থেকে সড়কের কোনও কোনও জায়গায় ঢাকামুখী লেনের মেরামত কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া বুধবার (২৬ অক্টোবর) সড়ক ভবনে সওজের প্রধান প্রকৌশলীর সভাপতিত্বে সভা হয়েছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে শুক্র ও শনিবারের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত মহাসড়কের এ অংশটি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সম্পূর্ণভাবে যানবাহন চলাচল উপযোগী স্থায়ী রাস্তা করে দেবে বিআরটি কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার বিকালের পর যানজটের তীব্রতা আরও বাড়বে। 

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) আলমগীর হোসেন বলেন, ঢাকাগামী গাড়িগুলো দুই-তিন লেনে এসে টঙ্গীর মিলগেট এলাকায় এক লেনে ঢাকায় প্রবেশ করছে। যানজট নিরসনে গত রাতে ওই অংশে ময়মনসিংহমুখী মহাসড়কে এক লেনের মেরামত কাজ হয়েছে। আমরা বিআরটিকে সার্বিক সহযোগিতা করছি। এ অংশে কোনও গাড়ি ফেসে গেলে আমাদের স্ট্যান্ডবাই দুটি রেকার রয়েছে তা দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তা উদ্ধার করে সড়ক সচল রাখার চেষ্টা করছি।