উপজেলা চেয়ারম্যানের শার্টের কলার ধরে আ.লীগ নেতার ধাক্কা

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজের বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর এনায়েত হোসেন মন্টুকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও শার্টের কলার ধরে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত ২৮ অক্টোবর (শুক্রবার) জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদে থাকা নেতাদের উপস্থিতিতে মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভায় এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে গত ২৮ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মির্জাপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়ে সভা চলাকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর এনায়েত হোসেন মন্টু এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়।

একপর্যায়ে মীর এনায়েত হোসেন মন্টুকে গালিগালাজ ও তার শার্টের কলার ধরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং মারধরের চেষ্টা করেন সিরাজুল ইসলাম। পরে সেখানে থাকা অন্যান্য নেতাকর্মীরা পরিস্থিতি শান্ত করেন। এ ঘটনায় ৩১ অক্টোবর (সোমবার) সিরাজুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ।

এতে বলা হয়, একজন সম্মানিত বর্ষীয়ান নেতার সঙ্গে আপনার (সিরাজুল ইসলাম) এমন কর্মকাণ্ড ও আচরণ মির্জাপুরের সব মানুষের কাছে নিন্দনীয়। যা দলীয় গঠনতন্ত্রের শৃঙ্খলা পরিপন্থি। আপনার এমন অশালীন কর্মকাণ্ড সংগঠনের সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ার শামিল। এতে আপনাকে সংগঠন থেকে কেন বহিষ্কার করা হবে না- তার লিখিত জবাব আগামী তিন দিনের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদকের কাছে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর এনায়েত হোসেন মন্টু বলেন, ‘সিরাজুল ইসলাম জেলা পরিষদে সদস্য পদে নির্বাচন করে হেরে যায়। ওই সভায় তার নির্বাচনে হারার দায় দিয়ে আমাকে কিল-ঘুষি মারে এবং ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। আমি তার বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ বলেন, ‘সিরাজুল ইসলাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে হেরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে দোষারোপ করছেন। ওই দিন এই বিষয়ে সিরাজুল ইসলাম উপজেলা চেয়ারম্যানকে নানাভাবে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এরপর চেয়ারম্যানের শার্টের কলার ধরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এ সময় সেখানে থাকা নেতাকর্মীরা পরিস্থিতি শান্ত করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জবাব সন্তোষজনক না হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুক্রবার (৪ নভেম্বর) বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে তার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম দাবি করেন, ‘তার সঙ্গে আমার কোনও গালিগালাজ বা ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।  নির্বাচনে হেরে গিয়ে তার সঙ্গে এমন আচরণ করবো কেন? তিনি তো আমার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন না। তার অভিযোগ মিথ্যা। তিনি পরিষদে বসে বসে অনেকের বিরুদ্ধে এসব আবোলতাবোল কথাবার্তা বলেন। আমি কোনও কারণ দর্শানোর নোটিশ পাইনি। তবে বিষয়টি শুনেছি।’