লেপ-তোশকের দোকানে ভিড় বাড়ছে

ফরিদপুরে শীতের প্রস্তুতি হিসেবে লেপ-তোশক কিনতে দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। কেউ কেউ পুরোনো লেপ-তোশক ঠিকঠাক করিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ নতুন করে বানিয়ে নিচ্ছেন। ফলে ব্যস্ত সময় পার করছেন লেপ-তোশকের কারিগররা।

শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সকালে ফরিদপুর শহরে লেপ বানাতে আসা আরশাদ হোসেন বলেন, ‌‘এবার শীতের শুরুতেই রাতে ঠান্ডার দাপট দেখা দিয়েছে। তীব্র শীত শুরু হলে দোকানগুলোতে বেশি চাপ থাকে, তাই আগেভাগেই একটি পুরোনো লেপের তুলা বদলিয়ে নতুন কাপড় দিয়ে সেলাই করে নিচ্ছি। সাথে একটি নতুন লেপ তৈরি করতে দিয়েছি। তবে গতবারের চেয়ে তুলা ও কাপড়ের দাম অনেকটা বেশি হওয়ার লেপের দাম বেড়েছে।’

তোশক বানাতে আসা রহিমা বেগম বলেন, ‘বাড়িতে একটি তোশক ছিল পুরোনো হয়ে গেছে, ছিড়েও গেছে কয়েক জায়গায়। সেটি সংস্কার করতে দিতে এসেছি। এর আগে তৈরি করতে নিয়েছিল ৩ হাজার টাকা। এবার সংস্কার করতেই লাগছে ২ হাজার টাকা।’

তিনি আরও বলেন, ‘দাম অনেক বেড়েছে। তারপরও শীত চলে এসেছে, তাই এগুলো ঠিক করতেই হবে। এছাড়া নতুন করে একটি তোশক বানাতে দিয়েছি, দাম পড়েছে সাড়ে ৩ হাজার টাকা এবং ৫ কেজি তুলা দিয়ে একটি লেপ বানাতে দিয়েছি, খরচ পড়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা।’

লেপ-তোশক কিনতে দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা

ফরিদপুর শহরের জনতা ব্যাংকের মোড়ে বেশ কয়েকটি লেপ-তোশক তৈরির দোকান রয়েছে। দোকানি রাশেদ শেখ বলেন, ‘গতবারের চেয়ে এবার তুলা ও কাপড়ের দাম কিছুটা বেশি হওয়ায় লেপ-তোশক তৈরির খরচ বেড়েছে। তারপরও ক্রেতার কমতি নেই। শীতের শুরু থেকেই কাজের চাপ বেড়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার দোকানে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭টি লেপ-তোশক তৈরি করা হচ্ছে। ভালো মানের সাদা তুলা দিয়ে তৈরি লেপ বিক্রি করছি ১ হাজার ২০০ টাকায়। ৫ কেজি তুলা লাগছে লেপ তৈরি করতে। লেপটি ৫ হাত লম্বা ও ৪ হাত চওড়া। কালো তুলা দিয়ে তৈরি লেপ বিক্রি করছি ৮০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকায়। দোকানে তিন জন কারিগর কাজ করছেন। কয়েক দিনের মধ্যে আরও কারিগর কাজে যোগ দেবেন।’

লেপ-তোশকের কারিগর হারুন শেখ বলেন, ‘শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গে কাজের ব্যস্ততা বেড়েছে। দিন-রাত কাজ করতে হচ্ছে। ক্রেতারা পুরোনো লেপ-তোশক সংস্কার করতে আসছে। আবার নতুন করেও অনেকই তেরি করছেন। তুলা ও কাপড়ের দাম বাড়লেও আমাদের মজুরি তেমন বাড়েনি।’

আরেক লেপ-তোশকের দোকানি শেখ শাহিন বলেন, ‘বছরের প্রায় আট মাস তেমন বেশি কাজ হয় না। শীতের ৪ মাসের আয়-রোজগার দিয়ে বাকি আট মাস চলতে হয়। তাই দিন রাতে কাজ করতে হয় শীতের মৌসুমে। শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গে কাজের ব্যস্ততাও বেড়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তুলা ও কাপড়ের দাম বাড়ায় এ বছর লেপ-তোশকের দামও বেড়েছে। লেপ বিক্রি করছি ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। এছাড়া তোশক বিক্রি করছি আড়াই হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায়।’