সারারাত অপেক্ষায় স্বজনরা, সকালে বালুর স্তূপে মিললো ব্যবসায়ীর লাশ

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে মো. কাউছার খান নামে এক বালু ব্যবসায়ীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) রাতের কোনও একসময় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শনিবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের জাকেরের শুরা এলাকার বালুর স্তূপের ওপর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত কাউছার খান (৪১) সদর ইউনিয়নের এম কে ডাঙ্গী গ্রামের মৃত জালাল খানের ছেলে। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে কাউছার দ্বিতীয়। মাটি ও বালুর ব্যবসার করতেন। স্ত্রী ও দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে তার।

চর হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য কুদ্দুস মন্ডল বলেন, ‌‘সকাল ১০টার দিকে গ্রামের কয়েকজন নারী পদ্মা নদীতে পানি আনতে গেলে কাউছারের মরদেহ বালুর স্তূপের ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। ওই নারীরা বিষয়টি আমাকে জানালে চরভদ্রাসন থানা পুলিশকে খবর দিই। বেলা ১১টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।’

কাউছারের ভাই লিয়াকত খান বলেন, ‘শুক্রবার দুপুরে খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে বের হন কাউছার। রাত ৯টা পর্যন্ত বাড়িতে না ফেরায় কাউছারকে কল দিয়ে মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। পরে আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কাউছারের খবর দিতে পারেনি কেউ।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘বাড়ি ফিরবে আশায় সারারাত ঘরের দরজা খোলা রেখে অপেক্ষায় ছিলাম আমরা। কিন্তু ফেরেননি। সকালে খবর পাই একটি মরদেহ পড়ে আছে জাকেরের শুরা এলাকায়। সেখানে গিয়ে দেখতে পাই মরদেহটি কাউছারের। কিন্তু তাকে কারা হত্যা করেছে তা আমরা জানি না।’

খবর পেয়ে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার, চরভদ্রাসন থানার ওসি মিন্টু মন্ডল ও পিবিআইয়ের সদস্যরা।

ওসি মিন্টু মন্ডল বলেন, ‘কাউছারের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় কাজ শুরু করেছে পুলিশ।’