‘লিখে রাখেন বিএনপি ক্ষমতায় যেতে পারবে না’

বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, ‘যারা বিএনপি করেন তারা আজকের দিনটি লিখে রাখেন—ক্ষমতায় যেতে পারবে না বিএনপি, ক্ষমতার ধারে-কাছেও না। আপনারা লন্ডনে পলাতক নেতার নির্দেশে মাঠে লাফাচ্ছেন, লাফান। আপনারা হচ্ছেন পরোটা ভাজার তাওয়া, আপনাদের তাওয়ার ওপরে অন্যজনের খেলা হবে। যারা বাংলাদেশে জীবনেও নির্বাচনে পাস করতে পারবে না, তারা খেলতে নেমেছে ভোটের মাঠে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি এখন দুইটা গ্রুপ হয়ে গেছে। একটা আম্মা গ্রুপ আরেকটা ভাইয়া গ্রুপ। ভাইয়া গ্রুপ ২০২৮ সালে নির্বাচনের কথা চিন্তা করে। আগামী নির্বাচন নিয়ে চিন্তা করে না। বিএনপির যে নেতা বিদেশে পলাতক, মায়ের কথা চিন্তা করে না যে নেতা, সে দেশের চিন্তা কীভাবে করবে? মা মরে মরে অবস্থা। এরপরও দেশে আসে না, বড় বড় কথা বলে।’

রবিবার (২৭ নভেম্বর) বিকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদস্যদের আনুষ্ঠানিক দায়িত্বভার গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। 

শামীম ওসমান বলেন, ‘রাজনীতির মাঠে কারা নেমেছে? কী হচ্ছে দেশে? আমি তো দেশের জন্য রাজনীতি করি। আমরাও পুলিশের সঙ্গে লড়াই করেছি, গুলি খেয়েছি। এই হাত দিয়ে ৪৯ জনের লাশ দাফন করেছি। লাশ নিয়ে গোরস্থানে যেতে পারিনি। মনিরের লাশ নিয়ে যাচ্ছিলাম, এ সময় গুলি করা হলো। সেই লাশ থেকে ৭০টা গুলি বের করেছি। পরে লিংক রোডের পাশে তাকে দাফন করেছি।’ 

নারায়ণগঞ্জ এক নম্বর টার্গেটে আছে উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, ‘নেত্রী বলেছেন খুনিদের সঙ্গে আলোচনা নেই। তারা লাশ চায়। তারা তিনটা জায়গা টার্গেট করেছে। যে তিনটা জায়গা টার্গেট করেছে তার মধ্যে নারায়ণগঞ্জ এক নম্বরে। নারায়ণগঞ্জে জনপ্রতিনিধি যারা এখানে আছেন সাবধান থাকেন, আগামী তিন চার-মাস দেশকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হবে। দেশকে ধ্বংস করা হলে কে কোন দল করে তা দেখবে না তারা। আমরা সবাই ভুক্তভোগী হবো। কাজেই তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে অনেক খুনির আস্ফালন দেখেছি। যারা বড় নেতা হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জে খুনের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিল। আমাদের দল না হয় বাদ দিলাম, বিএনপি নেতা তৈমূর আলম খন্দকারের ছোট ভাই সাব্বিরকে হত্যা করা হয়েছিল। কারণ, সে মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলেছিল। দিনে-দুপুরে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। এরকম বহু মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের নেতা সুইটসহ অনেককে হত্যা করা হয়েছে। বাইতুল আমানে আওয়ামী লীগ তৈরি হয়েছে বলে বাইতুল আমান ভেঙে দেওয়া হলো, পরে রিট করে আটকানো হলো। আমার ভাই সেলিম ওসমানকে গ্রেফতার করা হলো। তার প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করা হলো। আমার বাড়ি হিরা মহলে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা হয়েছিল। আমরা কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর কাউকে টাচ পর্যন্ত করিনি, কাউকে হামলা করিনি, মিথ্যা মামলা দিইনি। যখন ক্ষমতায় এসেছি তখন বলেছিলাম মাফ করে দেবো এবং দিয়েছি।’ 

উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘২০০৬ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতা ছাড়লো তখন শেষ অর্থবছরে বাজেট ছিল ৬০ হাজার কোটি টাকা। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেষ বাজেট দিয়েছেন ৬০ লাখ কোটি টাকা। এটাই হচ্ছে পার্থক্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, উন্নয়ন যদি চোখে না পড়ে তাহলে চোখের ডাক্তার দেখান।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান এম এ রশিদ প্রমুখ।