শিবচরে দাদন চোকদার হত্যা: আরও দুই অভিযুক্ত গ্রেফতার

মাদারীপুরের শিবচরের চরশ্যামাইল এলাকায় নৃশংসভাবে কুপিয়ে এক পা কেটে নিয়ে দিনমজুর দাদন চোকদার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আরও দুই পলাতক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পের একটি দল।

রবিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে মাদারীপুর শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ডের সামনে থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা দাদন চোকদার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

গ্রেফতার দুজন হলো রাকিব শেখ (১৭) ও সাগর শেখ (১৭)। রাকিব শেখ শিবচর পৌরসভার চরশ্যামাইল এলাকার আনোয়ার ওরফে আনু শেখের ছেলে ও সাগর শেখ একই এলাকার হালিম শেখের ছেলে।

রবিবার রাত ১১টার দিকে র‌্যাব-৮, সিপিসি-৩, মাদারীপুরের কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার কে এম শাইখ আকতার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, দুপুরে ওই দুই অভিযুক্ত মাদারীপুর আদালত এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিল।এ সময় খবর পেয়ে র‌্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পের একটি দল তাদের গ্রেফতার করে। পরে সন্ধার দিকে শিবচর থানায় সোপর্দ করে।

দাদন চোকদার হত্যাকাণ্ডের এক বছর হলেও হত্যা মামলার এ পর্যন্ত মোট ১০ আসামিকে গ্রেফতার করতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মূল আসামি এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে পুলিশ এখনও উদ্ধার করতে পারেনি নিহত দাদনের কেটে নেওয়া পা।

নিহত দাদনের ছোট ভাই হত্যা মামলার বাদী পান্নু চোকদার বলেন, ‘আমার ভাইকে ওরা নৃশংসভাবে হত্যা করলো। মামলা বর্তমানে সিআইডিতে রয়েছে। তারা দুটি চার্জশিটের মাধ্যমে ১৬ জনকে আসামি করে  চার্জশিট দিয়েছে। আজ ২ জনসহ ১০ আসামি গ্রেফতার হলো। তবে এতদিনেও পুলিশ আমার ভাইয়ের কেটে নেওয়া পা উদ্ধার করতে পারেনি।’

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দাদন চোকদার হত্যাকাণ্ড আমাদের কাছে একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড মনে হয়েছে। আমরা বেশ কয়েকজন আসামিকে ধরতে সক্ষম হয়েছি। আজ র‌্যাব-৮ দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে। তাদের সন্ধ্যার দিকে শিবচর থানায় সোপর্দ করে। বর্তমানে মামলাটি সিআইডির হাতে রয়েছে।

কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার কে এম শাইখ আকতার বলেন, ‘হত্যার ঘটনার পর গ্রেফতার আসামিরা আত্মগোপনে যায়। দেশের বিভিন্ন স্থানে গা ঢাকা দিয়ে এক বছর পলাতক অবস্থায় থাকে। ঘটনাটি র‌্যাবের নজরে এলে আমরা অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে গ্রেফতার করি। তাদের শিবচর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি।’

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৩ নভেম্বর শিবচর পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের পূর্ব শ্যামাইল গ্রামের দাদন চোকদার দুপুরের দিকে শিবচর বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিল। একই গ্রামের সেলিম শেখের বাড়ির সামনে এলে জমি-সংক্রান্ত বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে সেলিম শেখসহ ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে দাদন চোকদারের শরীর থেকে বাম পা কেটে বিচ্ছিন্ন করে গুরুতর আহত করে।

মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে প্রথমে শিবচর ও পরে ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পরদিন ২৪ নভেম্বর নিহতের ভাই পান্নু চোকদার বাদী হয়ে ২৮ জনকে অভিযুক্ত করে শিবচর থানায় হত্যা মামলা করেন।