পাঁচবার ফিঙ্গার দিয়েও মেলেনি পরিচয়, ক্ষোভ নিয়ে ছাড়লেন ভোটকেন্দ্র

সকাল ৯টায় ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে লাইনে দাঁড়ান মহর রাণী বেওয়া (৮৫)। কয়েক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে দুপুর ২টার দিকে ভোটকক্ষে পৌঁছান। এরপর তার আঙুলের ছাপ নেওয়ার জন্য পোলিং এজেন্ট সোহরাব হোসাইন চেষ্টা করেন। কিন্তু আঙুলের ছাপে পরিচয় শনাক্ত হয়নি। এরপর সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে এরপর আরও চার বার ফিঙ্গার নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তাতেও মহর রাণী বেওয়ার ফিঙ্গার মেলেনি।

এক পর্যায়ে পোলিং এজেন্ট ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তাকে কক্ষ থেকে বের হতে বলেন। পরে তিনি ক্ষোভ নিয়ে কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের নির্বাচনে মোথাজুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটে। শুধু মহর রাণীই নন, আরও অনেককেই এমন সমস্যায় পড়তে হয়েছে।

ওই নারী ধলাপাড়া ইউনিয়নের রামদেবপুর (সুন্দাইলপাড়া) গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের স্ত্রী। পুত্রবধূ মাজেদা আক্তারের সঙ্গে তিনি ভোট দিতে কেন্দ্রে যান।

মহর রাণী বেওয়া বলেন, সকাল ৯টায় ভোট দিতে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। দুপুর ২টা থেকে পৌনে ৩টা পর্যন্ত পাঁচবার ফিঙ্গার দিয়েছি। কিন্তু সেখানে আমার ফিঙ্গার মিলেনি। পরে স্যাররা বললেন বের হয়ে যেতে, এ জন্য চলে এসেছি। আগে ব্যালটে ভোট দিতাম কোনও সমস্যা হতো না। কিন্তু এবার ইভিএমে ভোট দিতে গিয়ে এমন সমস্যায় পড়তে হয়েছে। অনেক কষ্ট করে ভোট দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারিনি। ভোট দিতে না পেরে অনেক কষ্ট পেয়েছি।

তার পুত্রবধূ মাজেদা আক্তার বলেন, শাশুড়িকে নিয়ে ভোট দিতে গিয়েছিলাম। পাঁচবার চেষ্টা করেও তার ফিঙ্গার মেলেনি। সাবান দিয়ে হাত ধুয়েও চেষ্টা করা হয়েছে। তাতেও কোনও কাজ হয়নি। পরে ভোট দিতে না পেরে শাশুড়িকে নিয়ে চলে এসেছি। তিনি অনেক কষ্ট পেয়েছেন।

মোথাজুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সরোয়ার আলম খান বলেন, পাঁচবার ওই নারীর ফিঙ্গার নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তার ফিঙ্গার মেলেনি। পরে তিনি চলে গেছেন। 

প্রসঙ্গত, জেলার ঘাটাইল উপজেলার পাঁচটি ও কালিহাতী উপজেলায় একটি ইউনিয়নে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। এর মধ্যে ঘাটাইল উপজেলার রসুলপুর, সংগ্রামপুর, লক্ষ্মীন্দর, ধলাপাড়া ও সন্ধানপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ২১ জন, সাধারণ সদস্য পদে ১৪৩ জন এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৫৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ পাঁচটি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা এক লাখ দুই হাজার ৩৮১ জন। এ ছাড়াও  কালিহাতী উপজেলার বাংড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ছয় জন, সাধারণ সদস্য পদে ৩২ জন এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২২ হাজার ৪৫৫ জন।