সোনারগাঁয়ে আ.লীগের কর্মী সম্মেলনে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ জামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মী সম্মেলনে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। রবিবার (০৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জামপুর ইউনিয়নের মালিপাড়া প্রথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষের ঘটনায় চার জন ছুরিকাঘাহত হয়েছেন। তারা হলেন—শিকদার জিহাদ, শিকদার তাসফি, মাহমুদ রহমান রাব্বী, ইমন। অপর ছয় জন মারধরে আহত হয়েছেন। তারা হলেন—কাউসার, পলাশ, শাহরিয়ার, তানভীর সহ আরও দুই জন। তারা জামপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হামীম শিকদার শিপলুর অনুসারী। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় নেতাকর্মী সূত্র জানা গেছেঠ, রবিবার বিকালে জামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে জামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হুমায়ুন কবির ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া ‍উপস্থিত ছিলেন। সভায় সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে মঞ্চের পেছনে ডেকে নেওয়া হয় জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হামীম শিকদার শিপলুর এক অনুসারীকে। সেখানে তাকে মারধর করে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরুর অনুসারীরা। এই মারধরের সূত্র ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংর্ঘষ শুরু হয়।

পরে সাবেক চেয়ারম্যান হামীম শিকদার শিপলুর লোকজন উত্তেজিত হয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে বের হলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংর্ঘষ শুরু হয়। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপরও দফায় দফায় চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। সংঘর্ষের ঘটনায় কর্মী সম্মেলনের চেয়ার, টেবিল ও স্টেজ ভাঙচুর করা হয়। এ সময় শিপলু গ্রুপের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। পরে নেতাকর্মীরা তড়িঘড়ি করে সম্মেলন শেষ করেন। 

এ বিষয়ে জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হামীম শিকদার শিপলু বলেন, ‘জামপুর ইউনিয়নের কর্মী সম্মেলনে নেতাকর্মী নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করেছি। আমি মঞ্চে থাকা অবস্থায় কাউসার ভাই (সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত) বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় আমার অনুসারীদের মঞ্চের পেছনে নিয়ে মারধর করে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরুর লোকজন। এ সময় আমার ছেলেদের (অনুসারীদের) ছুরিকাঘাতসহ মারধর করা হয়। এতে ১০ জন আহত হয়েছে। মূলত পূর্ব বিরোধের জের ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরুর লোকজন তাদের ওপর হামলা করেছে। এই ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু বলেন, ‘আমার নেতাকর্মী ও অনুসারীরা এই হামলায় জড়িত নয়। আমি জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি, আর শিপলু হচ্ছে ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছিল। আমি কেন তার সঙ্গে বিরোধে জড়াবো?’

সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আহসান উল্লাহ জানান, সংঘর্ষের সময় পুলিশ উভয় পক্ষের লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। তবে কতজন আহত হয়েছে তা নিশ্চিত না। এ ঘটনায় মামলা হবে।