মিঠামইন যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, হাওরে উৎসবের আমেজ

দীর্ঘ ২৫ বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত উপজেলা মিঠামইন যাচ্ছেন। তার সফরকে ঘিরে ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রামসহ পুরো জেলায় সাজ সাজ রব। প্রধানমন্ত্রী সেদিন সকাল ১০টায় মিঠামইনে নবনির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল হামিদ সেনানিবাস উদ্বোধন করবেন। বিকালে আওয়ামী আয়োজিত জনসভায় যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর জনসভার মঞ্চ নির্মাণ, সাজসজ্জাসহ চলছে নানা কর্মযজ্ঞ।

১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন হাওরে। দীর্ঘদিন পরে আবার তিনি আসছেন। তাকে বরণ করতে শেষ সময়ের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে তোরণ নির্মাণ, ব্যানার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে রাস্তাঘাট। জনসভা সফল করতে চলছে সভা। সেনানিবাস উদ্বোধন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে প্রধানমন্ত্রী কামালপুরে রাষ্ট্রপতির বাড়িতে যাবেন। সেখানে দুপুরের খাবার গ্রহণের পর বিকাল ৩টায় জনসভায় যোগ দেবেন।

স্থানীয় হেলিপ্যাডে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে দফায় দফায় সভা করছে ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগ। এ ছাড়াও করিমগঞ্জ, তাড়াইল, বাজিতপুর ও নিকলীতেও নেতাকর্মীরা সমাবেশ সফল করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেউ বা সড়কপথে আবার অনেকে নৌপথে মিঠামইনে যাবেন বলে জানা গেছে। জনসভায় লাখো মানুষের সমাগম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জনসভার জন্য মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে

আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে হাওরে ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি শেষের দিকে। ঘরের আদলে দ্রুত তৈরি হচ্ছে জনসভামঞ্চ। দিনরাত কাজ করছেন শ্রমিকরা। আর এ কাজ তদারকি করছেন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। 

স্থানীয়রা বলছেন, ২৫ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী যখন মিঠামইনে গিয়েছিলেন, তখন সেখানে কোনও রাস্তাঘাট ছিল না। ছিল না কোনও অবকাঠামো বা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। সব মিলিয়ে চরম অবহেলিত জনপদ ছিল মিঠামইন। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরে গত ১৪ বছরে রাস্তাঘাটসহ বিপুল উন্নয়ন হয়েছে হাওরাঞ্চলে। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ হাওরবাসী। একই সঙ্গে তিনি মিঠামইনে যাওয়ায় খুব খুশি তারা। 

এদিকে আওয়ামী লীগের তরুণ কর্মীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীকে টিভিতে দেখলেও বাস্তবে দেখার সুযোগ হয়নি। দলে দলে জনসভায় যোগ দিয়ে এ সুযোগটি কাজে লাগাতে চান তারা। তবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে হাওরাঞ্চলে উন্নয়নের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ তৈরির দাবি জানিয়েছেন তারা। 

প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে তৈরি করা হয়েছে তোরণ

কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হাওরকে অনেক কিছু দিয়েছেন। তার কাছে নতুন করে কিছু চাওয়ার নেই। হাওরবাসী শুধু তাকে একনজর দেখার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। আর একটি দিন পর সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বর্তমান হাওরের উন্নয়ন প্রধানমন্ত্রীর স্পর্শেই হয়েছে, তাই আমরা চাচ্ছি তিনি সেটি নিজের চোখে দেখে যান।’

এদিকে জনসভাস্থল হেলিপ্যাড মাঠসহ পুরো উপজেলা সদর ও আশপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে জনসভার মাঠ। জনসভার দিন নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।