আ.লীগ নেত্রী শিরীন বেগমের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল

নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শিরীন বেগমের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করা হয়েছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত এক গেজেটে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। তবে সম্প্রতি বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে।

সনদ বাতিলের বিষয়ে গেজেটে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ৭৪তম সভায় শিরীন বেগমের মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। গত ৪ ফেব্রুয়ারি উপসচিব মুহাম্মদ রেহান উদ্দিন স্বাক্ষরিত এই গেজেট প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। শিরীন বেগমের মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নম্বর ছিল ১৯৩১।

শিরীন বেগম নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। বতর্মানে নারায়ণগঞ্জ কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়ার স্ত্রী।

সনদ বাতিলের পর নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে শিরীন বেগম বলেন, ‘আমি মহান মুক্তিযুদ্ধে একজন সহযোদ্ধা ছিলাম। এর আগে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মনোনীত সামসুন্নাহার হলের সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মহিলা গেরিলা কমান্ডার ও তৎকালীন (পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ফোরকান বেগমের নেতৃত্বে ও অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জসহ অন্যান্য এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। এসবের অসংখ্য প্রমাণপত্র আমার কাছে রয়েছে।’

বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেছি জানিয়ে শিরীন বেগম বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমাকে সনদ দেওয়া হোক বা হোক, তবু আমি মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধুর ডাকে দেশের স্বাধীনতার স্বার্থে সশরীরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। অধিকার আদায়ের জন্য বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেছি। হাইকোর্ট আমার মুক্তিযোদ্ধা বাতিলের আদেশটি স্থগিত করে বিষয়টি আমলে নিয়েছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার নুরুল হুদা বলেন, ‘২০১৪ সালে শিরীন বেগমের নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত করার কথা ওঠে। ওই সময় সোনারগাঁ উপেজলার মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধে তার সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে আপত্তি তোলেন। এমন পরিস্থিতিতে তিনি কীভাবে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন, তা আমার জানা নেই। এবার তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করা হয়েছে।’