১২ টন পেঁয়াজসহ নদীতে ডুবে যাওয়া ট্রাক ১৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার

রাজবাড়ীর গোয়লন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ফেরি ঘাটে পেঁয়াজ ও রসুন বোঝাই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীতে পড়ে ডুবে যায়। সোমবার (৬ মার্চ) রাত ৯টার দিকে দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ফেরিঘাটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সকাল ৯টার দিকে বিআইডব্লিউটিএ-এর উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা দৌলতদিয়া ঘাটে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করে। ১৬ ঘণ্টা পর আজ দুপুর ১টার দিকে ট্রাকটি উদ্ধার করা হয়। ট্রাকটি জামালপুরে যাচ্ছিলেন।

ট্রাকের সহযোগী (হেলপার) পল্লব দাস বলেন, আমরা ফরিদপুর সালথা এলাকা থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পেঁয়াজ ও রসুন বোঝাই করে রওনা দিয়েছিলাম। রাত ৯টার একটু আগে দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ফেরি ঘাটে এসে পৌঁছাই। ঘাটে এসে ট্রাকের ব্রেকের হাওয়া কম থাকায় আমার ওস্তাদ (চালক) হাওয়া ওঠায়। এই ফাঁকে আমি ট্রাক থেকে নেমে দোকানে খেতে যাই। পরে আমার ওস্তাদ হাওয়া উঠিয়ে ট্রাক নিয়ে ফেরিতে উঠতে গেলে ঢালুতে নামার সময় আর ব্রেকে কাজ করেনি। পরে ট্রাকটি সোজা পন্টুনের ওপর দিয়ে নদীতে পড়ে তলিয়ে যায়।

তিনি বলেন, ট্রাকটি তলিয়ে যাওয়ার দুই মিনিট পর ওস্তাদ পানির নিচ থেকে দরজা খুলে বেরিয়ে উপরে উঠে আসে। পরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আল্লাহ আমাদের নিজ হাতে বাঁচিয়েছেন।

পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমি রাত ২টার দিকে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে একটি ফোন পাই, আমি যে ট্রাকে পেঁয়াজ পাঠিয়েছিলাম সেটা ফেরিতে উঠতে গিয়ে নদীতে পড়ে গেছে। রাতেই আমি সালথা থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে চলে আসি। পরে ঘাটে এসে নৌ-পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা সকালে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করে।

তিনি বলেন, গাড়িতে ১২ টন পেঁয়াজ ও অল্প কিছু রসুন ছিল। আমার সর্বমোট সাড়ে তিন লাখ টাকার পেঁয়াজ-রসুন ছিল। অল্প কিছু পেঁয়াজ নদীতে ভেসে গেছে। বাকিগুলো ট্রাকের রশিতে আটকে থাকে। আমি ধারণা করছি, দুই লক্ষ্য টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ-এর আরিচা শাখার যুগ্ম পরিচালক এবং উদ্ধারকারী জাহাজ হামজার কমান্ডার এসএম আজগর আলি বলেন, আমরা খবর পেয়েই সকালে আরিচা থেকে রওনা দিয়ে সকাল ১০টার দিকে ঘাটে আসি। পরে সকাল পৌনে ১১টা থেকে আমরা উদ্ধারকাজ শুরু করি। দুপুর সোয়া ১টার দিকে আড়াই ঘণ্টা পর ট্রাকটিকে ফেরিঘাটের পন্টুনে তুলতে সক্ষম হই। আমাদের কাজে দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশের সদস্যরা সহযোগিতা করেন।

দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি ওসি জে এম সিরাজুল কবির বলেন, আমরা রাতেই খবর শুনে দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ফেরিঘাটে ছুটে যাই। পরে ট্রাকের চালককে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। ট্রাকটি উদ্ধারের বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে তারা সকালে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করে। ট্রাকের চালক এখন সুস্থ আছে এবং আমরা ঘটনাস্থলে সর্বক্ষণ রয়েছি।