২ কোটি ৭০ লাখ টাকা আত্মসাৎ, সাবেক সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

দুই কোটি ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নরসিংদী সদর উপজেলার সাবেক সাব-রেজিস্ট্রার নিহার রঞ্জন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে দুদকের গাজীপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইদুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

অভিযুক্ত সাব-রেজিস্ট্রার নিহার রঞ্জন বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত এবং মহাপরিদর্শক নিবন্ধন ঢাকা কার্যালয়ে সংযুক্ত রয়েছেন। তিনি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার কারফা গ্রামের নরেন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে।

মামলার বাদী সাইদুজ্জামান অভিযোগে উল্লেখ করেন, দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে নিহার রঞ্জন ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ২০ লাখ ১৪ হাজার ৩৭৯, ফেব্রুয়ারিতে ২৫ লাখ ৫৫ হাজার ১৫২, মার্চে ২৭ লাখ সাত হাজার ৫৪৩, এপ্রিলে ১৩ লাখ আট হাজার ৭৫০, মে মাসে ১৭ লাখ ৪৭ হাজার ৮২৫, জুনে ৪৯ লাখ ৮৬ হাজার ৫৫০, জুলাইয়ে ১৫ লাখ ৩৯ হাজার ৪১০, আগস্টে ৩০ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৯, সেপ্টেম্বরে ৩০ লাখ ৯৯ হাজার ৮২২, অক্টোবরে ৩০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৮৮ এবং নভেম্বরে ৯ লাখ ৩৫ হাজার ৭৪ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

মামলার বাদী বলেন, নিহার রঞ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পর যথা নিয়মে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে। দুদকের সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা-২-এর উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ শিহাব সালাম ও ওয়াহিদ মঞ্জুর সোহাগ গঠিত এনফোর্সমেন্ট টিম গত বছরের ৩০ মার্চ অভিযান চালিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, নরসিংদী সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল সম্পাদনকালে রেজিস্ট্রি খরচ, সরকারি রাজস্ব আদায় বাবদ অর্থ অর্থাৎ উৎস কর, স্থানীয় সরকার কর, রেজিস্ট্রেশন ফি ও স্ট্যাম্প ফি বাবদ আদায়কৃত অর্থ, পে-অর্ডারগুলো দিনভিত্তিক পৃথক রেজিস্ট্রার মোতাবেক আদায় ও লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু দিন শেষে প্রকৃত আদায়কৃত অর্থ, পে-অর্ডারগুলোর অর্থ ব্যাংকে কম জমা দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন সাব-রেজিস্ট্রার।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দিন শেষে ফি বহিতে প্রদত্ত যোগফল প্রকৃত যোগফল অপেক্ষা কম। এভাবে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ওই বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত উৎসকর বাবদ আদায়কৃত টাকা সংশ্লিষ্ট ফি বইতে প্রকৃত আদায়ের যোগফল অপেক্ষা কম দেখিয়ে নিহার রঞ্জন দুই কোটি ৭০ লাখ ১২ হাজার ৯৮২ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, নিহার রঞ্জন নরসিংদী সদর উপজেলায় সাব-রেজিস্ট্রার থাকাকালে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত নরসিংদী সদর অফিসে দলিল সম্পাদনকালে উৎস কর বাবদ আদায়কৃত অর্থ সংশ্লিষ্ট ফি বইতে প্রদত্ত যোগফল প্রকৃত যোগফল অপেক্ষা কৌশলে কম দেখিয়ে দুই কোটি ৭০ লাখ ১২ হাজার ৯৮২ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন।

দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় গাজীপুরের (নরসিংদী) উপপরিচালক মোজাহার আলী সরদার বলেন, বাদীর এজাহারটি দুদকের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে সোমবার দণ্ডবিধির ৪০৯ এবং ১৯৪৭ সানের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় মামলা করা হয়েছে। তদন্তের পর অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।