আত্মসমর্পণের পর জামিন পেলেন চিত্রনায়িকা মাহির স্বামী

সৌদি আরব থেকে ওমরাহ হজ পালন শেষে দেশে ফেরার একদিন পর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির স্বামী রকিব সরকার। সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪-এর বিচারক নিয়াজ মাখদুম দুই মামলায় রকিব সরকারের জামিন মঞ্জুর করেন।

বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রকিব সরকারের আইনজীবী আনোয়ার সাদাত সরকার। তিনি বলেন, ‘সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪-এ আত্মসমর্পণ করে দুই মামলায় জামিন আবেদন করেন রকিব সরকার। শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক নিয়াজ মাখদুম।’ 

আইনজীবী আনোয়ার সাদাত আরও বলেন, ‘পুলিশ দুই মামলার প্রতিবেদন দেওয়ার আগ পর্যন্ত রকিব সরকারের জামিন বহাল থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত।’

চাঁদাবাজি ও মারামারির ঘটনার সময় রকিব সরকার ও মাহিয়া মাহি দেশের বাইরে ছিলেন উল্লেখ করে আনোয়ার সাদাত বলেন, ‘সম্পত্তি নিয়ে সিভিল ডিসপোট আছে। এই সিভিল ডিসপোটকে কেন্দ্র করে মামলা হয়েছে। যে জমি নিয়ে ঘটনা সেই জমিতে আদালতের স্থিতাবস্থা আছে। এসব কারণে প্রথম মামলায় রকিব সরকারের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।’

পুলিশের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জামিন প্রসঙ্গে এই আইনজীবী বলেন, ‘তাদের জমি দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এই মামলার সূত্রপাত। রকিব সরকার বিদেশে থাকার কারণে উপায় না পেয়ে ফেসবুক লাইভে আসেন। তার লাইভ দেখে রকিব সরকারের স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তার সম্পত্তি রক্ষা করেন। কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে হেয় করার জন্য ফেসবুকে লাইভ করেননি তিনি। মূলত তার সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য ফেসবুকে লাইভ করেছিলেন।’

জামিন শুনানির সময় রকিব সরকারের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি আহসান উদ্দিন প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সরকারসহ কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবী।

দেশে ফেরার পর গতকাল স্বামী রকিব সরকারকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান মাহি

এর আগে গত শুক্রবার ভোরে মহানগরীর চান্দনা এলাকায় রকিব সরকারের মালিকানাধীন একটি শোরুমে হামলার ঘটনায় ফেসবুকে লাইভ করেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। এ সময় শোরুমে হামলার পাশাপাশি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি। ওই দিন রাতেই বাসন থানায় মাহিয়া মাহি ও তার স্বামী রকিব সরকারের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হয়। এরমধ্যে কোটি টাকার জমি দখল ও জমিতে কাজ করতে গেলে বাধা এবং মারধরের অভিযোগে একটি মামলা করেন ইসমাইল হোসেন নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি। ইসমাইলের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ রকিবের। এই মামলায় মাহি ও রকিব সরকারসহ ২৮ জনকে আসামি করা হয়। 

এ ছাড়া ফেসবুকে মিথ্যা ও বানোয়াট প্রচারণা চালিয়ে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মাহি ও রকিব সরকারের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছে পুলিশ। বাসন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রোকন মিয়া বাদী হয়ে এই মামলা করেন। 

সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরলে শনিবার দুপুরে মাহিয়া মাহিকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। কারাগারে পাঠানোর পাঁচ ঘণ্টা পর মাহির জামিন মঞ্জর করেন আদালত। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান মাহি।