মানিকগঞ্জ শহরের সব শপিংমল অগ্নিঝুঁকিতে

মানিকগঞ্জ জেলা শহরের কোনও মার্কেটে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। শহরের সব শপিংমল অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

প্রায় দুই যুগ আগে নির্মিত জেলার বৃহত্তম পৌর সুপার মার্কেট। চার তলাবিশিষ্ট এই মার্কেটে বিভিন্ন পণ্য ও কাপড়ের তিন শতাধিক দোকান রয়েছে। পাশেই রয়েছে তিনটি বেসরকারি হাসপাতাল ও রোগনির্ণয় কেন্দ্র, মসজিদসহ চা-পানের বেশ কিছু দোকান। মার্কেটে সব সময় থাকে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়। নির্মাণের পর থেকে পৌর কর্তৃপক্ষ এই মার্কেটে অগ্নিনির্বাপণের কোনও ব্যবস্থা করেনি।

পৌর সুপার মার্কেটের মতো জেলা শহরের শপিংমলগুলোতে নেই অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা। যেকোনও সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। ঝুঁকি নিয়েই ভবনগুলোতে চলছে ব্যবসায়িক কার্যক্রম। এমনটি জানিয়েছেন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।

জেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দেওয়া তথ্যমতে, জেলা শহরের মার্কেটগুলো অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকার পৌর সুপার মার্কেট, জেপি প্লাজা, তাজ বিপণিবিতান, সিদ্দিক সুপার মার্কেট, নবীন সুপার মার্কেট, শহীদ রফিক সড়কে মায়ের দোয়া মার্কেট, করিম বাদল সুপার মার্কেট, হাজি রহমান ব্রাদার্স ম্যানশন, বিনোদিনী প্লাজা, জিতেন্দ্র নিউ সিটি মার্কেট, তৃপ্তি প্লাজা, কালীবাড়ি মার্কেট ও সিঙ্গাপুর সুপার মার্কেট।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সূত্রে জানা গেছে, আইন অনুসারে বহুতল ভবন ও শপিংমলে নিজস্ব পাম্প, রাইডার, গ্যাস মাস্কসহ কয়েক ধরনের প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা, আলাদা বহির্গমন পথ, ভবনের ওপরে ও নিচে সংরক্ষিত পানি, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখতে হবে। অথচ জেলা শহরের কোনও শপিংমল ও বহুতল ভবনে এসব ব্যবস্থা নেই। কিছু আবাসিক ভবনে দু-একটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকলেও অধিকাংশই মেয়াদোত্তীর্ণ।

পৌর সুপার মার্কেটে অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা নেই বলে স্বীকার করেছেন বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার মাশরু খান। তিনি বলেন, ‘এই মার্কেট নয়, জেলা শহরের কোনও মার্কেটে অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা নেই। গত ৯ এপ্রিল অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ জানিয়ে ফায়ার সার্ভিস থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। সে অনুযায়ী ফায়ার এক্সটিংগুইশার রাখাসহ অগ্নিনির্বাপণের যন্ত্রপাতি বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’

মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা শহরের কোনও মার্কেটে অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা নেই। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও মার্কেট নিয়মিত পরিদর্শন করে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কেউই পরামর্শ মানছে না। পৌরসভার মেয়রকে একাধিকবার বলা হলেও পৌর মার্কেটে কোনও অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা স্থাপন হয়নি। কোনও ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা কষ্টকর হবে।’

এ ব্যাপারে পৌর মেয়র মো. রমজান আলী বলেন, ‘জেলা শহরের অধিকাংশ মার্কেট অগ্নিঝুঁকিতে আছে বলে আমাকে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। তবে এখনও কেউ নিয়েছে কিনা, তা আমার জানা নেই।’