ভূঞাপুর প্রেসক্লাবে তালা দেওয়ার হুমকি আ.লীগ নেতার

সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া বৃদ্ধির সংবাদ প্রকাশের জেরে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর প্রেসক্লাবে তালা দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আজহারুল ইসলাম আজহার। তার এমন হুমকি দেওয়ার পরই দায়িত্বরত সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবে হামলা চালিয়েছেন অটোরিকশা শ্রমিকরা। 

বৃহস্পতিবার (৪ মে) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। আজহারুল ইসলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক ও উপজেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি। একই দিন দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে শ্রমিক সমাবেশে প্রেসক্লাবে তালা দেওয়ার হুমকি দেন তিনি।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে উপজেলা পরিষদ চত্বরে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এ সময় সময়ের আলো পত্রিকার ভূঞাপুর উপজেলা প্রতিনিধি আরিফুজ্জামান তপু সমাবেশের ছবি তুললে তাকে ধাওয়া করেন শ্রমিকরা। পরে তপু ভূঞাপুর প্রেসক্লাবে আশ্রয় নিলে সেখানে হামলা চালান শ্রমিকরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

উপজেলা পরিষদ চত্বরে শ্রমিক সমাবেশে আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সিএনজি অটোরিকশায় বাড়তি ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রেসক্লাবের কতিপয় সাংবাদিক সংবাদ প্রকাশ করেছে। তারা শ্রমিকদের শত্রু। শ্রমিকদের পক্ষে না থেকে বিপক্ষে সংবাদ প্রকাশ করেছে। ওসব সাংবাদিককে প্রতিহত করা হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রেসক্লাব সরিয়ে না নিলে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।’

তার এমন বক্তব্যের পর শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে প্রেসক্লাবে হামলা চালান বলে জানিয়েছেন কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী।

এর আগে ১ মে দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন সড়কে অটোরিকশার ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতা আজহারুল ইসলাম। সেদিন থেকে অটোরিকশায় বাড়তি ভাড়া নেওয়া শুরু করেন শ্রমিকরা।

প্রেসক্লাবে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে আজহারুল ইসলাম আজহার বলেন, ‘রাগের বসে ভূঞাপুর প্রেসক্লাব ভবন অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছি। সেইসঙ্গে তালা দেওয়ার কথা বলেছি। তবে প্রেসক্লাবে হামলা বা সাংবাদিকদের ধাওয়া করার কোনও ঘটনা ঘটেনি।’

এ ব্যাপারে ভূঞাপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহআলম প্রামাণিক বলেন, ‘প্রেসক্লাবে হামলার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। পরে এ নিয়ে কর্মসূচি দেবো।’

প্রেসক্লাবে হামলার ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি উল্লেখ করে ভূঞাপুর থানার ওসি মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে, সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিকদের আগের ভাড়া নিতে বলা হয়েছে বলে জানালেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলাল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘প্রেসক্লাবে হামলা ও সাংবাদিককে ধাওয়া করার কথা শুনেছি। ভাড়ার বৃদ্ধির বিষয়ে শ্রমিক নেতারা আমার কাছে এসেছিলেন, আমি তাদের উপজেলা প্রশাসনসহ সব নেতৃবৃন্দকে নিয়ে সভা ডেকে বিষয়টি সমাধানের কথা বলেছি। সেইসঙ্গে আগের ভাড়া নিতে বলেছি তাদের।’