এক জেলায় এক মাসেই ডেঙ্গুতে ৪৩ মৃত্যু, সবাই গ্রামের বাসিন্দা

ফরিদপুরে সেপ্টেম্বরে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল ডেঙ্গু। এই মাসে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে রোগটিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪৩ জনের মৃত্যু ও সাত হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন।

এরমধ্যে শুধু ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪০ জন মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে ২৯ জন ফরিদপুর জেলার বাসিন্দা ও বাকি ১৪ জন গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, কুষ্টিয়া ও মাগুরা জেলার।

এ ছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, আক্রান্ত ও মৃতদের মধ্যে সবাই গ্রামে বসবাস করতেন। তবে, জেলা শহরের কেউ মারা যায়নি।

জেলায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জুলাই প্রথম মৃত্যু হয়। এরপর আগস্ট মাসের আগ পর্যন্ত মাত্র চার জনের মৃত্যু হয় এবং আগস্ট মাসে মারা যান ১০ জন। আর সেপ্টেম্বরেই মারা গেছেন ৪৩ জন।

এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় দুই মাসের শিশুসহ আরও তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় এখন পর্যন্ত ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

রবিবার (১ অক্টোবর) জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পাঠানো বার্তায় জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া তিন জনই ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরমধ্যে নগরকান্দা উপজেলার ধর্মদী গ্রামের বাসিন্দা সাইদুর রহমানের দুই মাস বয়সী সন্তান আল-সামি মারা যায়। এ ছাড়া সালথা উপজেলার চরকান্দিয়া গ্রামের দাউদ মণ্ডলের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৪৫) ও রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কামাল মিয়ার স্ত্রী সাজেদা বেগম (৪০) মারা যান।

এক মাসে মৃত ৪৩ জনের মধ্যে ২৭ নারী ও ১৬ জন পুরুষ। মৃতদের মধ্যে পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৭, ৩০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৫, ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১০ ও ১০ বছর বয়সী এক শিশু রয়েছে।

অপরদিকে এক মাসে মৃত ৪৩ জনের মধ্যে ২৯ জন ফরিদপুর জেলার বাসিন্দা। এরমধ্যে জেলার নগরকান্দায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে। উপজেলাটিতে এক মাসেই ৯ জনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ভাঙ্গায় ৫, সদরপুরে ৪, বোয়ালমারীতে ৩, সালথায় ৩, মধুখালীতে ৩ ও সদর উপজেলায় ২ জন রয়েছেন। তাছাড়া জেলার বাইরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বোয়ালমারী ও সালথা উপজেলায় আরও দুই যুবক মারা যান বলে জানা গেছে।

জেলার সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, জেলায় এখন পর্যন্ত ১২ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৫৯ জন মারা গেছেন। এরমধ্যে সেপ্টেম্বরেই সর্বোচ্চ মৃত্যু এবং আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ৭৬৫ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন।