নিখোঁজের পাঁচ দিন পর স্কুলশিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার, চাচাসহ গ্রেফতার ৩

গাজীপুরের শ্রীপুরে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর স্কুলশিক্ষার্থী রামিমুল হাসান বিজয়ের (১৪) গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে শ্রীপুর পৌরসভার চন্নাপাড়া এলাকার রোমান বেপারীর ছেলে ও একই এলাকার শতদল কিন্ডার গার্ডেনের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

রবিবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামের শালবনের ভেতর থেকে ওই শিক্ষার্থীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় বিজয়ের চাচা একই এলাকার মৃত নূর হোসেন বেপারীর ছেলে জুয়েল বেপারীসহ (৩০), তার দুই সহযোগী দেলোয়ার হোসেনের ছেলে জিহাদ (১৭) এবং ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ধলিয়া গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে শামীমকে (২৪) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিজয়ের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সোমবার (২ অক্টোবর) তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

বিজয়ের বাবা রোমান বেপারী বলেন, ‘থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করলেও পুলিশ আমার ছেলেকে উদ্ধারে কোনও সহযোগিতা করেনি। ছেলেকে উদ্ধারের জন্য থানায় গেলে পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি। পুলিশের অসহযোগিতার কারণে আমার ছেলেকে অপহরণকারীরা হত্যা করেছে। মুক্তিপণের ১০ লাখ টাকা নিয়ে নেত্রকোনার সুসং দুর্গাপুর নিয়ে যেতে বলে সংযোগ কেটে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখে অপহরণকারীরা।’

নিহত স্কুলশিক্ষার্থী রামিমুল হাসান বিজয়

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল ফজল মো. নাসিম থানায় সাধারণ ডায়েরির (জিডি) বরাত দিয়ে জানান, মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে অজ্ঞাতনামা অপহরণকারীরা রামিমুল হাসান বিজয়কে বাড়ির পাশ থেকে তুলে নিয়ে যায়। ঘটনা জানাজানি হলে তার আত্মীয়স্বজনসহ সম্ভাব্য সকলকে বিষয়টি অবগত করা হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বিজয়ের চাচা জুয়েল বেপারী সবার পরামর্শে থানায় জিডি করেন।

অপহরণের একদিন পর বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ১০ মিনিটে বিজয়ের বাবার মোবাইল ফোনে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পরে তার চাচা জুয়েল শ্রীপুর থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি করেন। নিখোঁজ জিডির পর পুলিশ বিজয়কে উদ্ধারে কাজ শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তায় শ্রীপুর পৌরসভার চন্নাপাড়া এলাকা থেকে জিহাদ এবং ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ধলিয়াপাড়া গ্রাম থেকে শামীমকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চন্নাপাড়া থেকে বিজয়ের চাচা জুয়েলকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তিতে বিজয়ের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।