কাগজে-কলমে লেখা শেষ, ৭ জানুয়ারি শুধু ফলাফল ঘোষণা: মঈন খান

নির্বাচনি ফলাফল কাগজে-কলমে রাজধানীতে সর্বোচ্চ অফিসে বসে আওয়ামী লীগ লিখে ফেলেছে। আগামী ৭ জানুয়ারি শুধু তারা সেই ফলাফল ঘোষণা করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি নির্বাচনি তফসিল দিয়েছে। কোন নির্বাচন, যেই নির্বাচনে তারা প্রকাশ্যে সকল লজ্জা ভুলে গিয়ে দর-কষাকষির পর সিট ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। সিট ভাগাভাগি করে যদি এমপি নির্ধারিত হয়, তাহলে এই নির্বাচন ইতোমধ্যে ব্যর্থ হয়ে গেছে। কাজেই এটা কোনও নির্বাচন নয়। এই নির্বাচন দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ধোঁকা দেওয়া যাবে না।’

মঈন খান বলেন,  ‘স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে বিজয় দিবসে আজকে আমরা কোন বিজয় উদযাপন করতে এসেছি। বাংলাদেশের মানুষকে এই প্রশ্ন সরকারের সামনে তুলে ধরতে হবে। এটা কীসের বিজয়। একদলীয় শাসনের বিজয়, নাকি একনায়কের শাসনের বিজয়। নাকি এখানে এমন একটি সরকার চলছে, যারা মানুষকে কথা বলতে দেয় না, ভোট দিতে দেয় না, যারা মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে ব্যর্থ। এই জন্য কি আজ থেকে ৫২ বছর আগে বাংলাদেশ তথা পূর্ব পাকিস্তানের লাখ লাখ মানুষ বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। একটি স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টি কি এই কারণে করেছিল? তারা করেছিল গণতন্ত্রের জন্য। এই দেশের দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য। এই কথা ভুলে গেলে চলবে না। আজকে আওয়ামী লীগ দেশের কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে গণতন্ত্রের অপমৃত্যু ঘটিয়েছে। তারা চরম দুর্নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে এসে ১৮ কোটি মানুষকে এই প্রশ্ন করতে হবে। আওয়ামী লীগ যদি দাবি করে, তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি তাহলে তাদের জবাবদিহি করতে হবে কেন তারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে বাংলাদেশে একদলীয় স্বৈরাচারী সরকার কায়েম করেছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ এই সরকারকে প্রত্যাখান করেছে। ইতোমধ্যে এই সরকারের নৈতিক পরাজয় হয়েছে।’

শহীদদের প্রতি বিএনপির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ (ছবি: সাজ্জাদ হোসাইন)

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আমরা বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছি এবং কোটি কোটি মানুষকে সম্পৃক্ত করেছি। আমরা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী। আমরা লগি-বইঠার রাজনীতি করি না। শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় এই দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো সেই জন্য রাজপথে আছি। সরকারের সমস্ত উসকানি বর্জন করুন। মিথ্যা হামলা-মামলা ও গায়েবি মামলা দিয়ে তারা বিগত ৬ সপ্তাহে আমাদের ২৩ হাজার নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করেছে। এসব ভুয়া মামলা দিয়ে আমাদের গণতন্ত্রকামী নেতাকর্মীদের কারারুদ্ধ করে এই দেশে তারা থাকতে পারবে না। এই দেশের মানুষ তাদের বর্জন করেছে। আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে তারা রাজনৈতিক মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। মহাসচিবকে গায়েবি মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে এক-এগারোর ভুয়া মামলা দিয়ে বিদেশে আটকে রেখেছে । তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না।’

এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমানসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।