ফেরি ডোবার সময় সবাইকে যিনি সজাগ করেছেন তিনিই তীরে ফিরতে পারেননি

ইউটিলিটি ফেরি রজনীগন্ধা ডুবির পর ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এখনও সন্ধান মেলেনি ফেরিটির দ্বিতীয় মাস্টার (যন্ত্রচালক) হুমায়ুন কবিরের (৩৯)। ফেরি ডোবার সময় অন্যরা সাঁতরে কিংবা উদ্ধারকারীদের মাধ্যমে তীরে ফিরলেও তিনি নিখোঁজ থাকেন।

হুমায়ুন কবীর বিআইডব্লিউটিসি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের আরিচা আঞ্চলিক কমিটির দক্ষিণ (পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া) শাখার সভাপতি ছিলেন।

নিখোঁজ হুমায়ুনের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরে। তার পরিবারে স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। তিনি ২০১১ সালে বিআইডব্লিউটিসিতে চাকরি শুরু করেন। সাত মাস আগে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরিতে যোগ দেন।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সালাউদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত ফেরিতে থাকা সবাইকে আত্মরক্ষার জন্য হুমায়ুন সজাগ করলেও তিনি নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি। ফেরিটি যখন ডুবছিল হয়তো কোনও কিছুর চাপায় নিচে ফেরির মধ্যে আটকে আছেন।

এদিকে বিআইডব্লিউটিসি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাতীয় শ্রমিকলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মহসিন ভূঁইয়া ২৪ ঘণ্টায়ও তার কোন খোঁজ না মেলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এদিকে, তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধা উদ্ধারের কাজ গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে স্থগিত করা হয়। এর আগে, বিআইডব্লিউটিএ’র উদ্ধারকারী জাহাজ হামজার মাধ্যমে রাত ৮টা পর্যন্ত দুটি ট্রাক উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবার উদ্ধার কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে।

এ দুর্ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিসির পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

জেলা প্রশাসক রেহেনা আক্তার বলেন, এই ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সানজিদা জেসমিনকে প্রধান করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মতিউর রহমান বলেন, এই দুর্ঘটনার অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাতে ফেরি রজনীগন্ধা ৯ ট্রাক নিয়ে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছিল। রাত ৩টার দিকে ঘন কুয়াশায় নদীতে নোঙর করে রাখে। তবে সকালে পানি উঠে ফেরিটি ডুবে যায়।