মুন্সীগঞ্জে অটোরিকশাচালককে গলা কেটে হত্যা: চার জনের মৃত্যুদণ্ড

মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে অটোরিকশাচালক হত্যা মামলায় চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (দ্বিতীয়) আদালতের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন উর্মি আসামিদের উপস্থিতিতে ওই রায় প্রদান করেন।

দণ্ডবিধির (৩০২/৩৪) ধারায় মৃত্যুদণ্ড ও ৩৯৪ ধারায় একই আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করেন আদালতের বিচারক। এ ছাড়া ওই মামলার অপর আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়।

মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন রুবেল ইসলাম নয়ন, মোহাম্মদ রাজেল, আকরাম মোল্লা ও হাসান শেখ। এ ছাড়া এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ইমরান হোসেন তোফাজ্জল ও সবুজ শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস প্রদান করেন। অপরদিকে, আমির হোসেন, কাজল শেখ ও পলাতক আসামি আবুল কালাম নামের তিন আসামিকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর নিহত আশরাফুল ইসলাম প্রতিদিনের মতো সন্ধ্যা ৬টার দিকে অটোরিকশা নিয়ে বাসা থেকে বের হয়। পরে রাত ৮টার দিকে নিহতের বাবা মো. রফিকুল ইসলামের কাছে খবর আসে তার ছেলে আশরাফুলকে উপজেলার গোয়ালিমান্দ্রা এলাকায় গলাকাটা অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা উদ্ধার করে লৌহজং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে রাত ১০টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এজাহার বিবরণীতে আরও জানা যায়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ অপরাপর আসামিরা অটোরিকশা ছিনতাইয়ের উদ্দেশে আশরাফুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় আঘাত করে রাস্তায় ফেলে রেখে রিকশাটি নিয়ে চলে যায়।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম পরের দিন ৩০ সেপ্টেম্বর লৌহজং থানায় ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে এ ঘটনায় একে একে নয় আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দি প্রদান করেন এবং মামলায় সাক্ষ্য প্রদান করেন ১৩ জন সাক্ষী। দীর্ঘ তিন বছরের অধিক সময় সার্বিক বিচারকার্য শেষে আদালত আজ এই রায় প্রদান করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম পল্টু জানান, এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ ন্যায়বিচার পেয়েছে।