ছুটির দিনে বাণিজ্য মেলায় লক্ষাধিক মানুষ, সর্বোচ্চ বিক্রি

ছুটির দিনে জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৮তম আসর। শুক্রবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রূপগঞ্জের পূর্বাচলে বসা এই মেলা ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়ে মুখরিত ছিল।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, এদিন মেলায় এক লাখ ৪০ হাজার লোকসমাগম হয়েছে, যা এবারের আসরে সর্বাধিক। এদিন বিগত দিনগুলোর চেয়ে সর্বোচ্চ বেচাকেনার কথা জানিয়েছেন স্টল মালিকরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে মেলা প্রাঙ্গণে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণা শুরু হয়। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হতেই ভিড় বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার পর লোকে-লোকারণ্য হয়ে যায়। সেইসঙ্গে জমে উঠে বেচাকেনা। স্টল ঘুরে ঘুরে পছন্দের জিনিসপত্র কিনেছেন ক্রেতারা। উপভোগ করেছেন আনন্দ।

চাষাঢ়া থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মেলায় এসেছেন রিপন মজুমদার। তিনি বলেন, ছুটির দিনে সময় পেয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মেলায় এসেছি। মেলা জমে উঠেছে। অনেক লোকসমাগম হয়েছে। বেশ ভালো লেগেছে। পছন্দের কিছু জিনিসপত্র কিনেছি আমরা।

বিভিন্ন স্টলে দর্শনার্থীরা

রূপগঞ্জের বারপা থেকে বন্ধুকে নিয়ে এসেছেন রফিক আহমেদ। তিনি বলেন, বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেছি। একটা ব্লেজার কিনেছি। কেনাকাটার চেয়ে মেলায় এসে খুব আনন্দ উপভোগ করেছি।

বেচাকেনা কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে তুর্কিশ প্যাভিলিয়নের বিক্রেতা লিপি আক্তার বলেন, তুর্কি পণ্যের দিকে ক্রেতাদের ঝোঁক একটু বেশি। যে কারণে সারাদিন স্টলে ভিড় ছিল। মেলার বিগত দিনগুলোর চেয়ে বিক্রি বেশি হয়েছে। আশা করছি, শেষ দিনগুলোতে ক্রেতা-দর্শনার্থী আরও বাড়বে। জমজমাট বেচাকেনা হবে।

পুরো মেলায় রাজা মামার চায়ের স্টল দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে। স্টলের চা বিক্রেতারা বলেছেন, লাইন ধরে সবাই ৫০ টাকা করে এক কাপ চা পান করছেন। স্বাদের কারণে সবাই ভিড় করছেন। নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ পাচ্ছেন না। আজ (শুক্রবার) সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে।

বেচাকেনায় ব্যস্ত ক্রেতা-বিক্রেতারা

এদিন মেলার মিনি পার্কে বেশি লোকসমাগম হয়েছে। উপচেপড়া ভিড়ের কারণে পার্কে পা ফেলার জায়গা ছিল না। রাইডগুলোতে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।

ছুটির দিনে মেলায় এক লাখ ৪০ হাজার লোকের সমাগম হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব বিবেক সরকার। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘এবারের আসরে আজ তৃতীয় শুক্রবার সবচেয়ে বেশি লোকসমাগম হয়েছে। এক লাখ ৪০ হাজার লোক এসেছেন। সর্বোচ্চ বিক্রি হয়েছে। আমরা সন্তুষ্ট। আশা করছি, সামনে বিক্রি আরও বাড়বে।’

আয়োজকরা জানিয়েছেন, এই আসরে স্টলের সংখ্যা ৩৫১টি। যা গত বছর ছিল ৩৩১টি। দেশীয় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, হংকং, ইরান, ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা নিজেদের পণ্য বিক্রি করছেন। গত বছরের তুলনায় এবার মেলায় প্রবেশমূল্য বেড়েছে। এ বছর দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা ও ১২ বছরের কম বয়সীদের জন্য ২৫ টাকা টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে। যা গত বছর ছিল যথাক্রমে ৪০ ও ২০ টাকা।