প্রেমের টানে বাংলাদেশে এসে আইফোন হারালেন ইন্দোনেশীয় তরুণী

প্রেমের টানে মাদারীপুরের শিবচরে এসে বিয়ের সাজ সাজতে পার্লারে গিয়ে নিজের দামি মোবাইল ফোন হারিয়েছেন ইন্দোনেশীয় তরুণী ইফহা। প্রেমিক মাদারীপুরের শিবচরের শামীম মাদবরকে বিয়ে করতে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে এসেছেন ভিনদেশি এই তরুণী। গত দুই বছর আগে সিঙ্গাপুরে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

প্রেমের সম্পর্কের দুই বছর পূর্তিতে বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। পরে শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাঁকজমক বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই দিন সকালে বিয়ের জন্য সাজতে শিবচর পৌর বাজারের স্বর্ণ পট্টির ‘পাকিস্তানি বিউটি পার্লার’ নামের একটি বিউটি পার্লারে এলে সাজগোজের সময় তার আইফোনটি চুরি হয়ে যায়।

জানা গেছে, সেখানে তার সঙ্গে ছিলেন দেবরের স্ত্রী। সেখানে নিজের আইফোন ফিফটিন প্লাস মডেলের ফোনটি একটি টেবিলের ওপর রাখেন। এ সময় পার্লারের লোকজন তাকে সাজাতে ব্যস্ত ছিলেন। পরে ফোনটি আর খুঁজে পাননি। এ ঘটনায় শিবচর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।

তরুণীর স্বামী শামীম মাদবর বলেন, ‘সকালে শিবচরের স্বর্ণ পট্টির পাকিস্তানি বিউটি পার্লারে সাজার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ইফহাকে। পার্লারের ভেতরে সাজের সময় ফোনটি চুরি হয়। পরে সিসি টিভির ফুটেজে দেখা যায়, বোরকা পরিহিত এক নারী পার্লারের দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে ফোনটি নিয়ে দ্রুত বের হয়ে যায়। এটি খুবই দুঃখজনক। পার্লারে কোনও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। পরে আমরা শিবচর থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি।’

পাকিস্তানি বিউটি পার্লার

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘এমন চুরির ঘটনায় আমি ইফপার কাছে ছোট হয়ে গেলাম। সেই এমন আইফোন আরও কিনতে পারবে। তবে আমাদের দেশে এমন চোর আছে সেটা আমাদের ছোট করে দিলো। তবে ফোন গেছে সমস্যা নেই। চোরটাকে খুঁজে বের করা দরকার, আমি তাকে দেখতে চাই।’

ফোন হারিয়ে ইফহা বলেন, ‘আমি পার্লারে গেছি, কিন্তু একজন আলিবাবা আমার মোবাইল নিয়ে গেছে। তাকে শনাক্ত করা উচিৎ।’

পাকিস্তানি বিউটি পার্লারের স্বত্বাধিকারী রেশমা আক্তার বলেন, ‘আমার পার্লারে সারাক্ষণই কাস্টমার থাকেন। গত ১৮ বছর ধরে আমি এটি পরিচালনা করছি। একসঙ্গে ৬/৭ নববধূকে সাজানো হয়। আমাদের সবাই ব্যস্ত থাকেন। ওই বিদেশি মেয়ে আর তার সঙ্গে আরও একজনসহ দুই জন সাজের জন্য আসে। ফোনটি সারাক্ষণই তার হাতে ছিল। সাজ শেষে তিনি ফোনটি নিয়ে দরজার কাছের টেবিলের ওপর রেখে নাকফুল পরতে গেলে ওই সময়ই বোরকা পরা এক মহিলা এসে ফোনটি নিয়ে বেরিয়ে যায়। তখন আমি আরেকটি কাজ করছিলাম। যার ফোনটি হারিয়েছে তিনি সিসি ফুটেজ দেখছেন। তার বিশ্বাস করছে যে, তাদের ফোনটি চুরি  হয়েছে। আমাদের এখানে কোনও হাত নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবসময় মালামাল নিজেদের সঙ্গে রাখতে বলি। নিজ দায়িত্বে রাখার জন্য বলা হয়। তারা থানায় গিয়েছিল। পুলিশ এসেছিল। তাদের সঙ্গে সাজানো বাবদ চুক্তির টাকাও পাইনি।’

শিবচর থানার ওসি সুব্রত গোলদার বলেন, ‘ভুক্তভোগী এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আমরা তদন্ত করছি।’