১৫ বছর আগে নারায়ণগঞ্জ ছিল সন্ত্রাস কবলিত: পলক

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, আজ থেকে ১৫ বছর আগে নারায়ণগঞ্জ ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন, সন্ত্রাস কবলিত, একটা উন্নয়ন বঞ্চিত এলাকা। অথচ আজ জাতীয় সংসদ ভবন থেকে আমি রওনা করে নারায়ণগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমিতে পৌঁছাতে সময় লেগেছে মাত্র ৪০ মিনিট। এটা কি আজ থেকে ১৫ বছর আগে কল্পনা করা যেতো?

শুক্রবার (৮ মার্চ) বিকালে শহরের কালিরবাজার এলাকায় নারায়ণগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে নারী প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

২০ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশনায় আমরা সারা দেশে সবার কাছে সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিয়েছি। ফলে আজ ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। ৬ লাখ ৯০ হাজার ফ্রিল্যান্সার, ৫০ হাজারের অধিক কল সেন্টারের এজেন্ট, ৫০ হাজারের অধিক ছেলে-মেয়ে হার্ডওয়্যার ম্যানুফেকচারে কাজ করছে। গত ১৫ বছরের ব্যবধানে সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যারসহ সব মিলিয়ে আমাদের প্রায় ২০ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।

৬ মাসের মধ্যে শেখ কামাল আইটি ইনস্টিটিউট দৃশ্যমান হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শামীম (ওসমান) ভাইয়ের ড্রিম প্রজেক্ট ৬ লেনের রাস্তা ৮ লেন হয়ে যাচ্ছে। এক্সপ্রেস হয়ে গেছে। শামীম ভাইয়ের আরেকটা ড্রিম এখানে মেডিক্যাল হাসপাতাল। ওনার একটা দাবি ছিল, নারয়ণগঞ্জের এসএসসি ও এইচএসসি পাশ ছেলে-মেয়েদের জন্য স্মার্ট কর্মসংস্থানের ঠিকানা করতে পারে, সে জন্য শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট সেন্টার হবে। আমি আসার সময় সে জায়গা পরিদর্শন করে এসেছি। আগামী ৬ মাসের মধ্যে এটা দৃশ্যমান হয়ে যাবে। তিন বছর পর যখন এর কাজ শেষ হয়ে যাবে তখন সেখানে অন্তত ৫ হাজার ছেলে-মেয়ের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। নারায়ণগঞ্জের মাটিতে বসে তারা ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের বড় বড় কোম্পানিতে আউটসোর্সিং করবে। দেশের প্রযুক্তি সেবার প্রয়োজন মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট ইকোনোমিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশে রূপান্তরিত করতে নারায়ণগঞ্জের মাটি থেকে নেতৃত্বে দেবে।

জেলার ২৬৫ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারীকে সরকারি ল্যাপটপ দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর, বন্দর, রূপগঞ্জ এবং আড়াইহাজার উপজেলা থেকে ২৬৫ জন সফল স্মার্ট নারী উদ্যোক্তা যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটা করে ল্যাপটপ পায়, তাহলে তাদের কী আর কারও ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে। আজ আমাদের বোনদের জন্য ৫ মাসের প্রশিক্ষণ (বিভিন্ন ট্রেডে), এক মাসের ইন্টার্নশিপ ও একটি করে ৬৫ হাজার টাকা মূল্যের ল্যাপটপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন। এতে করে তারা বড় পর্যায়ের উদ্যোক্তা হয়ে উঠবে আশা করছি।

অনুষ্ঠান শেষে জেলার ২৬৫ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারীর হাতে সরকারি ল্যাপটপ তুলে দেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. মোস্তফা কামাল, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চন্দনশীল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।